বৃহস্পতিবার , ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক
  3. উদ্যোক্তা
  4. ক্যাম্পাস
  5. খেলাধুলা
  6. নারীমঞ্চ
  7. ফেসবুক থেকে
  8. বিএনপি
  9. বিচিত্র
  10. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  11. বিনোদন
  12. মতামত
  13. মুক্ত মতামত
  14. রাজধানী
  15. রাজনীতি

আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস

প্রতিবেদক
Hasan al Sakib Sakib
নভেম্বর ২১, ২০২৪ ১০:১২ পূর্বাহ্ন

১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই দিনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা প্রথমবারের মতো সম্মিলিতভাবে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। সম্মিলিত এই অভিযানের কারণে পাকিস্তানি শত্রু বাহিনীকে প্রতিহত করে মুক্তির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তিন বাহিনীর সমন্বিত আক্রমণ বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এই অবদানকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এবারে দিবসটির গভীর তাৎপর্য রয়েছে। চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা ছিল অনন্য। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনী সমর্থন না দিলে ইতিহাস অন্যরকম হতে পারত।

আজ বৃহস্পতিবার যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদগুলোতে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবসের ইতিহাস: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রথম দিকে শুরু হয়েছিল সীমিত আকারে, বিচ্ছিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের মধ্য দিয়ে। পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমানবাহিনীর বাঙালি সদস্যরা তাদের নিজ নিজ ইউনিট ত্যাগ করে বাংলাদেশ বাহিনীতে যোগদান করেন। এরপর ভারতীয় ভূখণ্ডের সীমান্তের ওপারে প্রাথমিকভাবে স্থল বাহিনী হিসেবে নিয়মিত ইউনিটে সংগঠিত করে। নৌ-কমান্ডোদের একটি ছোট দলও নৌ শাখা খুলেছিল এবং কয়েকজন পাইলট এবং বিমানবাহিনী এয়ার উইং গঠন করেছিল। এভাবে তিন বাহিনীর সুশৃঙ্খল আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পরে এক মাসের কম সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন হয়।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী: সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জাতীয় সংকট মোকাবিলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতাসহ জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ডে সশস্ত্র বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন, এ বছর জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ববোধ, ধৈর্য ও দেশপ্রেম সাধারণ মানুষের প্রশংসা অর্জন করেছে। কেবল দেশেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে পেশাগত দক্ষতা, সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়সহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী দুর্গত জনগণের শেষ ভরসার স্থান। বরাবরের মতো এবারও দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা, শিল্পকারখানায় নিরাপত্তা প্রদানসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, অস্ত্র উদ্ধারসহ সব কার্যক্রমে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সব সদস্যকে প্রধান উপদেষ্টা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীসহ সব বীর শহীদের প্রতি তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

দিবসের কর্মসূচি: ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা আজ সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার জন্য নির্ধারিত নিজস্ব কার্যালয়ে তিন বাহিনী প্রধানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন এবং কিছু সময় অতিবাহিত করে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরবর্তী সময়ে বাহিনী প্রধানরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

এদিন প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেবেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক), সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আজ বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টার পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, বাহিনীত্রয়ের প্রাক্তন প্রধান, প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারী, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তাদের উত্তরাধিকারী, উচ্চপদস্থ অসামরিক কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজগুলো আজ দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটগুলোতে অবস্থান/নোঙরকৃত অবস্থায় রাখা হবে।

সর্বশেষ - সারা বাংলা