আয় না থাকলেও ২০০০ টাকা কর দিতে হবে বলে সম্প্রতি একটি গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। গুজবটিকে এমন ভাবে ছড়ানো হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে দেশের ১৭ কোটি মানুষকেই বোধহয় কর দিতে হবে! অথচ সত্য হলো কর দিতে হবে কর শনাক্ত করণ নম্বর (TIN) ধারী ৮৫ লক্ষ মানুষকে। যাদের (TIN) নেই তাদের কোনো কর দিতে হবে না।
এই e-TIN ধারীদের বিভিন্ন সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণের জন্য আবেদন, পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয়, ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ, কোনো কোম্পানির পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হওয়া, ব্যবসায়িক সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ, সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ালেখা করা, অস্ত্রের লাইসেন্স নেয়া, আমদানি-রফতানি ব্যবসার সনদ থাকলে বা নতুন সনদ নিতে, সিটি বা পৌর এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স থাকলে বা নতুন সনদ নিতে, ডাক্তার, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ারের মত পেশাজীবীদের সংগঠনের সদস্য হয়ে থাকলে বা সদস্য হতে চাইলে, বিবাহ নিবন্ধকের লাইসেন্স পেতে হলে, কোনো বাণিজ্য সংগঠনের সদস্য হলে বা সদস্য হতে চাইলে, ড্রাগ লাইসেন্স থাকলে বা করাতে চাইলে, দেশের যে কোনো জায়গায় বাণিজ্যিক বা শিল্প কারখানায় গ্যাস লাইন এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় বাসা বাড়ির গ্যাস সংযোগ নিতে এবং আগের সংযোগ বজায় রাখতে,নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেটের জন্য, নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেটের জন্য, ইটভাটার অনুমোদন নিতে, সিটি করপোরেশন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে, আমদানির এলসি খুলতে, যে কোনো ধরনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্থিতি ১০ লাখ টাকার বেশি হলে,জমি বা বাসা ভাড়া দিলে, পরিবহন সেবার ব্যবসা করলে,এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাসে ১৬ হাজার টাকার বেশি পেলে, চার চাকার যে কোনা মোটরগাড়ি নিবন্ধন, ফিটনেস নবায়ন , মালিকানা হস্তান্তর করতে ও অনলাইনে যে কোনো ধরনের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে চাইলে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।
পাশাপাশি সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের অধীনে গঠিত কোনো ক্লাবের সদস্য হলে, পণ্য সরবরাহের ঠিকাদারি কাজে টেন্ডার জমা দিতে, আমদানি-রপ্তানির বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বা খুলনায় ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন ও উপজেলা, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া, স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড, অনুমোদিত গ্র্যাচুইটি ফান্ড, পেনশন ফান্ড, অনুমোদিত সুপারএন্যুয়েশন ফান্ড এবং শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ব্যতীত অন্যান্য ফান্ডের রিটার্ন দাখিলের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
সরকার সংশ্লিষ্টরা গুজবে কান না দেওয়ার জন্য দেশ বাসিকে অনুরোধ করেছেন। সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
সুমনা আক্তার লিলি
সদস্য, রংপুর জেলা আওয়ামিলীগ