বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষকে আত্মীয়তায় আবদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এক সময় আমরা শহীদ দিবস পালন করতাম। আজ আমরা শহীদ দিবসের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হওয়ায় পৃথিবীর যেখানেই বাংলা ভাষা-ভাষির মানুষ আছে তাদের সবাইকে আমরা আত্মীয়তায় আবদ্ধ করতে পেরেছি।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি আয়োজিত ‘জাতীয় সাহিত্য উৎসব ২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মাতৃভাষার যে কতটা কদর, তা আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বুঝতে পেরেছি। ওই সময় এক লাখ শরণার্থী কলকাতায় গিয়েছিল। আমিও গিয়েছি। পুরো আগরতলা তখন বাংলাদেশের মানুষে লোকারণ্য। বাংলা ভাষা-ভাষিদের সবার যে এক আত্মার সম্পর্ক তা তখন টের পেয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের নাগরিকেরা পাশে না দাঁড়ালে হয়তো আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাধীনতা পেতাম না। ভারতের নাগরিকরা আমাদের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন। সেজন্য আমরা তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। আজকে দুই বাংলার সাহিত্যের ভাষা বাংলা, কৃষ্টি, সংস্কৃতিতেও কোনো ভেদাভেদ নেই। কলকাতা, আগরতলা গেলে মনে হয় আমরা যেন ঢাকাতেই আছি। বাংলা ভাষা আমাদের দুই দেশকে আন্তরিকতার স্থানে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বায়ান্নতে ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি ঋণের শেষ নেই। বঙ্গবন্ধু জেলে বসে ওই আন্দোলনের সমর্থন দিয়েছিলেন। পাকিস্তান ভাগ হলেও তারা বাংলাকে স্বীকৃতি দিলো না। বঙ্গবন্ধু তখন ভাবলেন, পাকিস্তান থেকে এই দেশ উদ্ধার করতে হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু ও ৭ মার্চের ডাকে সাড়া দিয়ে আগরতলা গিয়েছিলাম। ভারত সরকার আমাদের থাকতে দিয়েছে, খেতে দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে। তারপর দেশে ফিরে যুদ্ধ করেছি। দেশ স্বাধীন করেছি।
ভারত থেকে আসা সাহিত্যিক, সংস্কৃতিজনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এতো দ্রুত আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন প্রমুখ।
সূত্র:ঢাকা পোস্ট