রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeরংপুরডিমলায় ভাঙ্গা সেতুর কারণে মানুষের চরম ভোগান্তি

ডিমলায় ভাঙ্গা সেতুর কারণে মানুষের চরম ভোগান্তি

মো. হাবিবুল হাসান হাবিব, ডিমলা প্রতিনিধি:

নীলফামারীর ডিমলায় কয়েক বছর ধরে বন্যার পানিতে ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সেতু সংস্কার বা পূণঃনির্মান না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ও বিভিন্ন স্থানে নতুন সেতু নির্মান করলেও নজর নেই ভাঙা সেতু পূণঃনির্মানে। ক্ষতিগ্রস্ত সেতুগুলো সংস্কারের দ্রূত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী এলাকাবাসীর।

সরজমিনে দেখা যায়, বন্যার পানির চাপে ভেঙে গেছে উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের তিনটি সেতু। গত পাঁচ বছর থেকে স্থানীয়দের উদ্যোগে ভাঙ্গা সেতুতে বাঁশের সাকো তৈরি করেই জেলা-উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করছে গ্রামের প্রায় বিশ হাজার মানুষ। কৃষিপণ্য পরিবহন, অসুস্থ রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সেবা ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে সবচেয়ে ভোগান্তি বেশী এই এলাকার মানুষের। সেতু নির্মানের জন্য খোদ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করলেও কোন লাভ হয়নি।

পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, সেতুগুলো ভেঙে যাওয়ায় তিস্তা চর এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। শত শত কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে উঠাতে না পেরে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। শিক্ষার্থীরাও বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সভায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের তিনটি সেতু ভেঙ্গে পড়ে আছে। মধ্যম সুন্দরখাতা-রূপাহারা যাওয়ার একমাত্র রাস্তার উপরে সিংগাহারা নদীর একটি সেতু বন্যার পানিতে ভেঙ্গে যায়। সেতু ভেঙে পড়ে থাকায় পানির স্রোতের ব্যঘাত ঘটে। কৃষকের রোপনকৃত আমন ধানের ক্ষতি হওয়ার দূর্ভোগের শেষ নেই এলাকাবাসীর। মধ্যম সুন্দর খাতা গ্রামের মাইঝালীর ডাঙ্গা যাওয়ার একমাত্র রাস্তার উপরে সেতুটির মাঝখানে ভেঙ্গে দুুই পাশ্বে ফাটল ধরায় যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে।

এলাকার শাহিনুর, সবুজ, জয়নাল, জাকাত মন্ডল, হাসু মন্ডল, সুভাস, পাষান সহ ১০ থেকে ১৫ জন বাসিন্দা জানান, সেতুটি নির্মাণের পর সাত থেকে আট বছর পারাপারের উপযুক্ত ছিল। পাঁচ বছর আগে বর্ষায় প্রথমে মাইঝালীর ডাঙ্গার সেতুটি মাঝখানে দেবে ফাটল ধরে ও সিংঙ্গাহাড়া নদীর সেতুটি দেবে যায়। স্থানীয়রা দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষ তা মেরামত করেনি। পরের বছর বর্ষায় আরো বিমসহ সেতুর মাঝ বরাবর নদীতে দেবে যায়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুকিপূর্ন সেতু দিয়েই যাতায়াত করছে গ্রামের মানুষরা। এতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। তাদের দাবি দ্রূত ভাঙ্গা সেতুগুলো সংস্কার করা হোক। নাউতারা নদীর ছাতনাই মিয়াপাড়া গ্রামের সেতুটি ২০২১ সালের বন্যায় ৮ ফুট দেবে হেলে পড়েছে। সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটিও সরে গেছে। গ্রামের বাসিন্দা লালমিয়া বলেন, সেতুটি ভেঙে পড়ায় প্রায় ২ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হচ্ছে তাদের। এতে সময় এবং অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে। যানবাহন ঢুকতে না পারায় এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিকাজ অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। কেউ অসুস্থ হলে ঘাড়ে চেপে নদী পার হতে হয়।

রুপাহারা এলাকার হাবিবুর রহমান জানান, সেতুর মধ্যাংশ দেবে নদীতে হেলে পড়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় সেতুর উজানে কয়েকবছর ধরেই বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যাওয়া তিন ফসলি জমিগুলোতে আর ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এবারও একই পরিণতি হওয়ায় কৃষকদের বুকে এখন চাপা আর্তনাদ। রুপাহারা এলাকার সবুজ ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এই সেতু দিয়ে তারা প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আশা করতেন। সেতু ভেঙে যাওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুগুলোর তালিকা করে দ্রত সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

Al Mahmud Apu
Al Mahmud Apu
Traine Sub-Editor, Sangbad Post

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন