দেশের বিপর্যয়মূলক আর্থিক মন্দার সময় পদত্যাগ করেছেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। বড় ধরনের সংকটের মূহুর্তে ফেলে রোববার (৩০ অক্টোবর) পদত্যাগ করেন ৮৯ বছর বয়সী সদ্য সাবেক এই খিস্টান প্রেসিডেন্ট। পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট প্যালেসও ছেড়েছেন তিনি।
রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের বৈরুত বন্দরে মারাত্মক বিস্ফোরণের এবং চলমান বিপর্যয়মূলক আর্থিক মন্দার সময় দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন ৮৯ বছর বয়সী মিশেল আউন। তবে চলমান সংকটের মধ্যেই পদ ছাড়লেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে আউনের দায়িত্বপালনের অর্ধেকেরও বেশি সময়ের মতো লেবাননে বর্তমানে একটি তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিসভা শাসন করছে। এই মন্ত্রিসভার প্রধানমন্ত্রী-মনোনীত গত ছয় মাস ধরে দেশটিতে সরকার গঠনের চেষ্টা করছেন। লেবাননে মিশেল আউন একজন গভীরভাবে বিভাজনকারী ব্যক্তিত্ব। অনেক খ্রিস্টান তাকে পছন্দ করেন। খিস্টানরা মূলত আউনকে লেবাননের সাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় তাদের রক্ষক হিসাবে দেখে থাকেন।
মেয়াদের শেষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সমুদ্রসীমা চুক্তি স্বাক্ষর করে লেবানন। ইসরায়েলের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ এবং লেবাননের পক্ষে সই করেন প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। এর ফলে দুই দেশের জন্যই সমুদ্রের বিরোধপূর্ণ গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলনের পথ খুলে যায়।
তবে অন্যদের কাছে ২০১৯ সালের আর্থিক মন্দার তুলনায় এসব সাফল্য খুবই ফ্যাকাশে। কারণ ওই মন্দা লেবাননের জনসংখ্যার ৮৯ শতাংশেরও বেশিকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে প্ররোচিত করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মে মাসে লেবাননের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিশেল সুলাইমান মেয়াদ শেষ হওয়ায় পদত্যাগ করেন। এরপর টানা ২৯ মাস রাষ্ট্রপ্রধানহীন অবস্থায় ছিল মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। এরপর ২০১৬ সালের অক্টোবরের শেষে লেবাননের সাবেক সেনাপ্রধান মিশেল আউন দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।