শরিয়তপুরে এইচএসসি একটি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে দুই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের পরীক্ষার সময় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা নড়িয়া উপজেলার ডগ্রী ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রসায়ন, ইতিহাস (প্রথম পত্র), ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি (প্রথম পত্র), ব্যবস্থাপনা ও বিপণন (প্রথম পত্র), গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন (প্রথম পত্র) বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। প্রতিটি পরীক্ষার আগে উপজেলা প্রশাসন পরীক্ষার্থীদের জন্য দুই সেট প্রশ্ন পাঠায়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হল সুপারের মুঠোফোন খুদে বার্তা দিয়ে জানিয়ে দেন কোন সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ওই খুদে বার্তায় দেওয়া সেট নম্বর অনুযায়ী শিক্ষকরা প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
মঙ্গলবার ইউএনও’র খুদে বার্তা অনুযায়ী ২ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভুল করে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের ৪২ শিক্ষার্থীকে ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয়। এ ভুলটি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর শিক্ষকদের নজরে আসে। তখন পরীক্ষার্থীদের পুনরায় ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয় এবং ওই প্রশ্ন অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে বলা হয়। ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করায় পরীক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় অপচয় হয়। কিন্তু পরে আর তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী ৭০ নম্বরের পুরো উত্তর লিখতে পারেননি। এমনকি ভুলের কথা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা এড়িয়ে যান। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগকেও জানানো হয়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট চলে যাওয়ার পর তারা জানতে পারেন ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এতে ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা।
ডগ্রী ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক জি এম সামিউল ইসলাম বলেন, এই ৪২ জন শিক্ষার্থীর ভালো ফলের সম্ভাবনা নেই। বরং ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের হল সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, ভুল করে এমন ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে সঠিক প্রশ্নের সেট সরবরাহ করা হয়।
ইউএনও জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারের ভুলে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এমন একটি ভুলের কথা তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাননি। আর এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও রতন চন্দ্র দাসকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।