বাংলাদেশ নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করায় ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্নাটকের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূলত বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত অত্যাচারের বিষয়ে বিদ্বেষমূলক ওই মন্তব্য করেন তিনি।
আর এরপরই তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়া টুডে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত অত্যাচারের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে কর্নাটকের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী তথা দলত্যাগী বিজেপি নেতা কেএস ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে। আর এই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি), বজরং দল এবং ‘হিন্দু হিতরক্ষা সমিতি’র যৌথ সভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত অত্যাচারের প্রসঙ্গে বক্তৃতা করতে গিয়ে ঈশ্বরাপ্পা একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় জনগোষ্ঠী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এর পাশাপাশি কড়া সমালোচনা করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। সেই বক্তৃতার একটি ভিডিও ফুটেজও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সেই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
এই ঘটনার জেরে কর্নাটকের কংগ্রেস পরিচালিত সরকারের পুলিশ বিদ্বেষমূলক ভাষণের অভিযোগে মামলা করে ঈশ্বরাপ্পার বিরুদ্ধে। ইয়েদুরাপ্পার জেলা শিবমোগ্গার প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত নেতা ঈশ্বরাপ্পা ২০২২ সালের শুরুর দিকে দুর্নীতি এবং এক ঠিকাদারকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
আর তার জেরে মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এরপর বিধানসভা ভোটেও আর দলের মনোনয়ন পাননি তিনি। তার ছেলে কান্তেশকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সেসময় জল্পনা তৈরি হয়েছিল সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং আরেক সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সড়াভীর মতো ঈশ্বরাপ্পাও কংগ্রেসে যোগ দেবেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। আর সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই ফোন করে ঈশ্বরাপ্পাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। এরপর চলতি বছরের লোকসভা ভোটে হাভেরী আসনটি ছেলের মনোনয়নের জন্য চেয়েও ব্যর্থ হন ঈশ্বরাপ্পা।
এর প্রতিবাদে বিজেপি ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শিমোগা লোকসভা আসনে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুপ্পার পুত্র রাঘবেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। কিন্তু জিততে পারেননি কর্নাটকের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী ঈশ্বরাপ্পা।