টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪-এর গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় নিউইয়র্কের নাসাউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে দুই দল।
এই মাঠে এখনও পর্যন্ত ৮ ইনিংসে কোনও দল ১৪০ স্পর্শ করতে পারেনি। ভারতের মতো শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ ১১৯ রানে অল আউট হয়ে গেছে ১ ওভার বাকি থাকতেই। এমন এক উইকেটে আনরিখ নরকিয়াদের মুখোমুখি হওয়ার চিন্তাটাও ভীতিকর। আর দলটার নাম যদি হয় বাংলাদেশ, সে ক্ষেত্রে তাদের খুব একটা সুখস্মৃতি নেই নিকট অতীতে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক মুখোমুখি দেখায় পরিসংখ্যান ৮-০, কোনওবারই জয়ের ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং হারের মাত্রা এবং ব্যবধান যেন বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশের জন্য এখানে একটাই আশা, দক্ষিণ আফ্রিকা দলটা বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে অননুমেয়।
যেমন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টানা দুই বিশ্বকাপে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে ফরম্যাটে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, এই দক্ষিণ আফ্রিকাই আবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছে। এই দক্ষিণ আফ্রিকাই এবারে ১০৪ রান তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিং এমন একটা অবস্থায় আছে এতে শক্ত প্রতিপক্ষ আর সহজ প্রতিপক্ষ বলে কোনও কথা নেই।
জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলঙ্কা সবার সাথেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপের টপ অর্ডার ব্যর্থ।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা কতোটা গভীর একটা পরিসংখ্যানে দেখলে স্পষ্ট হবে। এই বছর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের গড় ২০।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিউ ইয়র্কের এই উইকেটে আনরিখ নরকিয়াদের সামনে মাঠে নামবে, যেই নরকিয়া সিডনিতে পাক্কা ব্যাটিং উইকেটে ১০ রানের বিনিময়ে বাংলাদেশের চার উইকেট নিয়েছিলেন। তার আগের বছর আবু ধাবিতে ৮ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আনরিখ নরকিয়া বনাম বাংলাদেশ- ৬ ওভার ৫ বলে, ১৮ রানে ৭ উইকেট। সাথে এবারে যোগ হয়েছেন বার্টমান, আর মহারাজ, রাবাদা, ইয়ানসেনরা তো আছেনই।
২০২১ ও ২০২২ বিশ্বকাপের ঐ দুই ম্যাচে একমাত্র লিটন দাস কিছুটা প্রতিরোধ দেখিয়েছিলেন, সিডনিতে ৩৪ ও আবুধাবিতে ২৪ রান করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের মোট স্কোর ছিল সিডনিতে ১০১, আবুধাবিতে ৮৪।
কেমন ম্যাচ হতে যাচ্ছে?
বহুল প্রতীক্ষার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেই তেমন রান হয়নি, ১২০ এর টার্গেটে ধুঁকে ধুঁকে হেরেছে পাকিস্তান, সেখানে এক দিনে খুব বেশি উন্নতি আশা করা যায় না।
ইএসপিএন ক্রিকইনফো লিখেছে, নিম্ন থেকে মাঝারি রকমের স্কোর হতে পারে, উইকেট হবে বোলারদের স্বর্গ।
এমনিতে গতি আর সুইং থাকলেই ব্যাটারদের জন্য খেলা কঠিন হয়ে যায় অনেক সময়, নাসাউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাথে যোগ হয়েছে অসমান বাউন্স।
বাংলাদেশ একটি ম্যাচে ও দক্ষিণ আফ্রিকা ২ ম্যাচে জয় পেয়েছে, দুদলই অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নাম্বার সম্ভাবনা বেশি। তবে বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টের নজর আছে শরিফুলের সেরে ওঠার দিকেও, শরিফুলের হাতের চোট ঠিক হয়ে গেলে তিনি একাদশে ঢুকবেন। এই উইকেটে ইতোমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা দুই ম্যাচ খেলেছে, আর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক ম্যাচ না খেললেও ভারতের বিপক্ষে ওয়ার্ম আপ ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে এই মাঠে নামবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম বলেন, “আমরা এখানে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছি কিছুটা হলেও সুবিধা পাবো আমরা। বাংলাদেশ কঠিন এক দল নিয়ে মাঠে নামবে, আমরা এই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।”
এইডেন মারক্রামের মতে ১৪০ রান করাটাই হবে প্রথম চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহেও উইকেটের দিকেই জোর দিয়েছেন, তিনি মনে করেন এই ধরনের উইকেট দুই দলের শক্তিমত্তার পার্থক্য কমিয়ে আনতে পারে। সূত্র: বিবিসি বাংলা