দেশে কওমি মাদ্রাসা বন্ধ করার বিষয়ে কোনো কথা বলেননি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, কওমি মাদ্রাসা বন্ধের কথা বলিনি। আমরা কওমি মাদ্রাসা বোর্ডগুলোর সঙ্গে কাজ করতে চাই। কওমি মাদ্রাসা বাংলাদেশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক উদ্দেশে তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোববার শুরু হওয়া জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশন শেষে কওমি মাদ্রাসা নিয়ে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তার বক্তব্যকে বিকৃত করে একটি রাজনৈতিক দল প্রচার করছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি জেলা থেকে একটি আলোচনা এসেছিল, অনিবন্ধিত, নাম-পরিচয়হীন নুরানি মাদ্রাসার নামে কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। সেগুলো নিবন্ধনের প্রক্রিয়া কী? সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছিলাম, যেসব নুরানি মাদ্রাসা গড়ে উঠছে, সেগুলোর যথাযথ নিবন্ধন আছে কি না, সেগুলোতে কিভাবে শিক্ষাক্রম পরিচালিত হচ্ছে? অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যাতে সাংঘর্ষিক না হয়, সে বিষয়ে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব, কিভাবে তা ইউনিফরমিটির মধ্যে আনা যায়।
বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) একটি রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক নামধারী কিছু সংগঠন থেকে বলা হয়েছে, নুরানি বা কওমি মাদ্রাসার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমি বলছি, এ আলোচনা আসে জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে যে, অনিবন্ধিত অনেক প্রতিষ্ঠান চলছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রক কারা? এ ধরনের মন্তব্য (কওমি মাদ্রাসা বন্ধ) আমি করিনি। তারা এ আলোচনা সৃষ্টি করে গুজব রটাচ্ছে। আমার বক্তব্য ভিডিওসহ আছে। গুজব রটিয়ে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টির নোংরা অপচেষ্টা করছে তারা।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা আগে আরও অনেক ধরনের মানহানিকর এবং আপত্তিকর কথা বলেছে। এর মধ্যে একটি ছিল যে আমি ইসকন নামের একটি সংগঠনের সদস্য এবং ইসকনের সদস্য হয়ে আমি ভিন্ন সংস্কৃতি শিক্ষাক্রমে ঢোকানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত আছি। আমার বক্তব্য হলো, এটি একেবারে আপত্তিকর, মানহানিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক কথা।
তিনি বলেন, আমি ইসকনের সদস্য নই। আমি একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। আমার বাবা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ কেন্দ্রে, পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটক হিসেবে আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। ইসকনের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়া মানে এই নয় যে, আমি ইসকনের সদস্য। ইসকনের সদস্য হিসেবে আমাকে প্রচার করা হচ্ছে, আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।