শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
spot_img
Homeরংপুর'মরার পরে সরকারি ঘর পাইম'

‘মরার পরে সরকারি ঘর পাইম’

মাজারুল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: মুজিব বর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনায় লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন- ২ প্রকল্পের ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপ কিন্তু ছিন্নমূল পরিবারে হাছনা বানুর জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করলে, এই প্রকল্পের আওতায় তাদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি বরাদ্দের ঘর। ঘরের আশায় মানুষের দ্বারেদ্বারে ঘুরছে হাছনা।

সরেজমিনে রবিবার (১৫ অক্টোবর ) বিকেলে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম গ্রামের হাছনা বানুর জরাজীর্ণ বসবাসের চিত্র।

হাছনা বানুর স্বামী মারা গেছেন এক যুগ আগের ও বেশি। স্বামীর বসত ভিটা ছিল কাশিরাম গ্রামের নোহালির চরে গ্রামে। সেটি ও ধীরে ধীরে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। হাছনার স্বামী মারা যাওয়ার পরই ছিন্নমূল হয়ে পড়ে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে হাসনা। ছেলে বড় হয়ে বিয়ার পর নেন না, হাছনা খবর, কোনো রকম, অন্যের দয়ায় টানাহার সংসারে কোনরকম মেয়েকে বিয়ে দেন এক দিনমজুর ছেলের কাছে, এর পর থেকেই অন্যদের দয়ায় বেঁচে আছেন হাছনা বানু।

তাই তিনি সাংবাদিকদের সামনে আক্ষেপ করে বলেন, মানুষের ওটে হাতপাতি টাকা নিয়া ভূমিহীন এর কাগজ তুলেছি, ইউএনও স্যারের কাছে কয়বার গেছুং তাও আজই ও মোক ঘরের ব্যবস্থা করে দেয় নাই, মুই মরার পরে সরকারি ঘর পাইম।

হাছনা দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ একটি ভাঙ্গা ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে আসছেন। বহুবার স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে একটা ঘর চেয়ে আবেদন করলেও তিনি পেয়ে আসছেন শুধুই প্রতিশ্রুতি। অথচ, সরকারি ঘর দেওয়ার শুরু থেকেই সরকারিভাবে আবেদন করে আসছে।

তিনি আরো বলেন, মোর বেটার একনা ঘর তাও তাকে না আটে, ওই ছোয়ার ঘরোক কত কষ্ট করি মানুষ করছুং এলা মোকে না চেনে। খেয়ে না খেয়ে সারাদিন পার করেন হাছনা।

হাছনার স্বপ্ন ছিল সন্তানেরা বড় হলে তার কষ্টের অবশান হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেল। তার কোন দায়িত্বই নেয়নি সন্তানেরা। বয়সকালে হাছনা পরিশ্রম করতে পারলেও এখন আর আগের মতো কাজ কর্ম করতে পারে না। বয়সের ভারে এখন চলাফেরাও করতে পারেন না তিনি।

স্থানীয়রা জানান, এখন তার স্বামীর কোনো ভিটে মাটি নেই। এখন ৬ শতক খাস জমির উপর থাকেন। পুরনো ঢেউটিন বেড়া আর চালে রয়েছে বর্ষাকালে ঘরটিতে বৃষ্টির পানি পরে আর ঝড় তুফানে ঘরটি হাওয়ায় দোল খায়। তবুও ছোট্ট ঘরটিতে খেয়ে না খেয়ে, অনাহারে-অর্ধহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অসহায় হৃতদরিদ্র হাসনা বানু।

তাই অসহায় হাছনা বানুর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে পরিবারটির সরকারি ঘরের ব্যবস্থার প্রত্যাশা করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর ইসলাম আহমেদ বলেন, আমি সুপারিশ করেছি এবং ইউএনও র কাছে কাছে পাঠিয়েছিলাম, তিনি আশ্বাস দিয়েছে, তার ঘর হবে।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন