নতুন করে অপরিশোধিত তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী সংস্থা ওপেক প্লাস। বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এমন ‘বিস্ময়কর’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটির সৌদি ও ইরাকসহ কয়েকটি উপসাগরীয় অঞ্চলের সদস্য দেশ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দৈনিক ১১ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল তেল কম উৎপাদন করা হবে।
ওপেকের নতুন এই ঘোষণার পরই বিশ্বব্যাপী বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। সোমবার এশিয়ার বাজারে দিনের শুরুতে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৮ শতাংশ বেড়েছে।
রবিবার ওপেক জোট থেকে অপরিশোধিত তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। এতেই এশিয়ার বাজারে অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম ব্যারেলপ্রতি বেড়ে ৮৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার যেখানে ব্যারেলপ্রতি ৭৯ ডলার ৮৯ সেন্টে বিক্রি হচ্ছিল। ওপেকের উত্তোলন হ্রাসের ঘোষণা রাশিয়ার জন্য উপকারী হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে কিছুটা কম দামে এশিয়ার বৃহৎ বাজারগুলোয় জ্বালানি তেল বিক্রি বাড়াবে মস্কো।
সৌদি আরবের উত্তোলন কমছে দিনপ্রতি ৫ লাখ ব্যারেল। এছাড়া ইরাক ও ইউএইর দিনপ্রতি উত্তোলন কমছে যথাক্রমে ২ লাখ ১১ হাজার ও ১ লাখ ৪৪ হাজার ব্যারেল। ওমান, আলজেরিয়া ও কাজাখস্তানও উত্তোলন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। ওপেক প্লাস সদস্য রাশিয়া ২০২৩ নাগাদ দিনপ্রতি ৫ লাখ ব্যারেল উত্তোল হ্রাসের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। জি৭ ভুক্ত দেশগুলোর মূল্য বেধে দেয়ার সিদ্ধান্তে গত ফেব্রুয়ারি উত্তোলন ৫ লাখ ব্যারেল কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় মস্কো।
ওপেকের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বাইডেন প্রশাসন। রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র বলেন, “বাজারে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতার মধ্যে উত্তোলন হ্রাস ভাল সিদ্ধান্ত নয়।”
শীর্ষ জ্বালানি রফতানিকারক সৌদি আরব বলছে, বাজার স্থিতিশীল করতে উত্তোলন কমিয়েছে তারা। চীনের লকডাউন প্রত্যাহার শেষে জ্বালানি তেলের চাহিদা যেমন চাঙ্গা হওয়ার কথা ছিল তেমনটা হয়নি। গত মাসে ব্যাংক খাতের অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতির শঙ্কা বাড়িয়েছে।
ওপেক প্লাস জোট দৈনিক উত্তোলন প্রায় ১১ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল কমাচ্ছে। যা বৈশ্বিক চাহিদার ১ শতাংশের সমান। উত্তোলন হ্রাসের মানে হচ্ছে বাজারে কম অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উপস্থিতি। এতে স্বাভাবিকভাবেই জ্বালানি তেলের দাম ফের বাড়বে।
গত শুক্রবার ব্রেন্টের দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার। গত জুনে যা ব্যারেলপ্রতি ১২২ ডলার স্পর্শ করেছিল। অথচ করোনা মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালে দাম ব্যারেলপ্রতি ২০ ডলারে নেমে এসেছিল। গত বছর উচ্চ দামে ভর করে রেকর্ড আয় করেছে সবগুলো জ্বালানি কোম্পানি। সূত্র:টেলিগ্রাফ