বৃহৎ আকার ও প্রচণ্ড শক্তিশালী হওয়ার জন্যই বিখ্যাত হাতি। তবে শক্তিশালী হাতির ওপর যদি বছরের পর বছর পর্যটক বহন করা হয়, তাহলে এটি মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে প্রাণীটির। থাইল্যান্ডের বন্যপ্রাণী রক্ষাকারী দলের প্রকাশিত একটি ছবিতেই দেখা গেছে এমনটি।
ওয়াইল্ডলাইফ ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন ইন থাইল্যান্ড (ডব্লিউএফএফইটি) নামের ওই সংস্থাটি ৭১ বছর বয়সী একটি হাতির ছবি প্রকাশ করেছে। হাতিটির নাম পাই লিন। দীর্ঘ ২৫ বছর পর্যটকদের বহন ও আনন্দ দানে ব্যবহার করা হয়েছে এটিকে। যেখানে তাকে একবারে ৬ জন মানুষকে বহন করতে বাধ্য করা হতো। ছবিটিতে দেখা যায় হাতিটির পিঠের অংশ বেঁকে গেছে।
বর্তমানে পর্যটক বহন না করলেও হাতিটির শরীরে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি এখনো দৃশ্যমান। থাইল্যান্ডের ওই সংগঠনটি জানিয়েছে, ‘শরীরের এক জায়গায় অব্যাহতভাবে চাপ পড়তে থাকলে এটি টিস্যু এবং হাড়ের ক্ষতি করতে পারে। যার মাধ্যমে বড় ধরনের শারীরিক ক্ষতির শঙ্কা বেড়ে যায়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পর্যটকদের হাতির পিঠে চড়ার বিষয়টি খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু প্রাণী রক্ষাকারীরা জানিয়েছেন, এটি খুবই নিষ্ঠুর একটি প্রথা। কারণ হাতির শরীর কোনো কিছু বহন করার উপযোগী না। পর্যটক বহন করে ব্যবসা করা ছাড়াও হাতিকে পণ্য পরিবহনের কাজে লাগানো হয়। একটা সময় কাজ করতে করতেই তাদের মৃত্যু হয়।
ডব্লিউএফএফইটি নামের ওই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এডউইন উইক যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, ‘পাই লিন নামের হাতিটি ২০০৬ সাল থেকে তাদের কাছে আছে। হাতিটির মালিকই আমাদের কাছে এটিকে দিয়ে যান্। কারণ তার অভিযোগ ছিল, পাই লিন কাজে খুবই ধীর হয়ে পড়েছিল, সারাক্ষণ যন্ত্রণায় থাকত এবং ঠিকভাবে আর কাজ করতে পারছিল না।’
সংস্থাটির প্রজেক্ট পরিচালক টম টেইলর বলেছেন, ‘ভারী কোনো কিছু বহন করার জন্য হাতির পিঠ উপযুক্ত নয়। তাদের মেরুদণ্ড ওঠা-নামা করে। পেছনের হাড়ের ওপর পর্যটকদের অব্যাহত চাপ তাদের স্থায়ী শারীরিক ক্ষতি করতে পারে। যেমনটি হয়েছে পাই লিনের ক্ষেত্রে।’
তিনি জানিয়েছেন, হাতির পিঠে যেন না চড়েন, সেজন্য সাধারণ মানুষদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন তারা। তিনি বলেছেন, ‘এটি বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ যে হাতি— ঘোড়ার মতো না, প্রাণীটি কোনো কিছু বহনে উপযুক্ত নয়। এছাড়া হাতি গৃহপালিত প্রাণীও নয়। এগুলোকে বন থেকে ধরে আনা হয় এবং ভয়াবহরকম পরিবেশে রাখা হয়।
সূত্র: সিএনএন