মহানবী (সা.) ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, ঝড়-বৃষ্টিসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্ত থাকতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতেন। কারণ সর্বশক্তিমান আল্লাহ মানুষের সবচেয়ে বড় রক্ষাকর্তা। মানুষকে আল্লাহর চেয়ে বেশি নিরাপত্তা আর কেউ দিতে পারে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আমাদের জন্য একটি বড় পরীক্ষা। এ সময় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং উপকূলীয় এলাকার মানুষদের সচেতন থাকতে হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতে হবে। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে- মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের সবরকমের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন এবং কিছু দোয়া পড়তে ও আমল করতে বেলেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তিনি বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। যদি তোমরা একে তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেখতে পাও, তবে এই দোয়া করবে-
اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ الرِّيْحِ وَ خَيْرِ مَا فَيْهَا وَ خَيْرِمَا أُمِرَتْ بِهِ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ الرِّيْحِ وَ شَرِّ مَا فَيْهَا وَ شَرِّ مَا أُمِرَتْ بِهِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি ওয়া খাইরি মা ফিহা ওয়া খাইরি মা উমিরাত বিহি, ওয়া নাউজুবিকা মিন শাররি হাজিহির রিহি ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উমিরাত বিহি’ (তিরমিজি, মিশকাত)।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট এ বাতাসের ভালো দিক, এতে যে কল্যাণ রয়েছে তা এবং যে উদ্দেশ্যে তা নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার উত্তম দিকটি প্রার্থনা করছি। এবং তোমার নিকট এর খারাপ দিক হতে, এতে যে অকল্যাণ রয়েছে তা হতে এবং এটা যে উদ্দেশ্যে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার মন্দ দিক হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, যেন তার উম্মতকে দুর্যোগ ও বিপর্যয় দিয়ে একসঙ্গে ধ্বংস করে দেয়া না হয়।
এসব বিপদকালীন সময়ে বিশ্বনবী বেশি বেশি তাওবা ও ইসতেগফার করতেন এবং অন্যদেরকেও তা পড়তে নির্দেশ দিতেন। তাই মুসলিম উম্মাহর উচিত ঘূর্ণিঝড়, প্রবল ঝড়ো বাতাস ও বিপদ-আপদে উল্লেখিত দোয়া পড়া এবং বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করা।
বৃষ্টি হলে যে দোয়া পড়বেন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন সারির মা ফিহি (বোখারি)
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই, এ মেঘের মধ্যে যে অনিষ্ট রয়েছে তার থেকে।
মেঘের গর্জনের সময় যে দোয়া পড়তে হয়-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং কুরআন মাজিদের এই আয়াত তিলাওয়াত করতেন-
উচ্চারণ : ‘সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রা`দু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি।’ (মুয়াত্তা)
প্রতিদিনই মানুষ নানা বিপদ ও সমস্যার মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করেন। হাদিসে আছে এসব বিপদ ও বালা মসিবত থেকে রক্ষা পেতে সর্বদা আল্লাহর রহমত ও সাহায্য কামনা করা উচিত।
বিপদ ও বালা মসিবত থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন এই দোয়া পড়তে হবে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক সকাল এবং সন্ধ্যায় নিন্মোক্ত দোয়াটি পড়বে; তাকে কোনো বিপদাপদ, বালা-মসিবত স্পর্শ করবে না-
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহিল লাজি লা ইয়াদূররু মাআস মিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামিই ওয়াহুয়া সামিয়ুল আলিম।’ (তিরমিজি, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)।