সৌদি আরবের বন্ধু হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু সে স্বপ্ন যে কোনো সময় দুঃস্বপ্নে রূপ নিতে পারে। দাবার গুটির চালে নেতানিয়াহুকে চেকমেট দেওয়ার মোক্ষম এক উপায় খুঁজে বের করেছে ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে ইরানের এমন কৌশলী খেলায় পাল্টে যেতে পারে ইসরায়েলের সৌদি নীতিও।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই মুসলিম দেশ হলেও সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে বেশ কিছু ইস্যুতে মতপার্থক্য প্রবল। বিশেষ করে, সুন্নি ও শিয়া মুসলিম মতাদর্শ- দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় বাধা। আবার সামরিক শক্তিতে সৌদি আরব পিছিয়ে থাকায় এ নিয়ে রিয়াদে উচ্চাভিলাষ রয়েছে, তেহরানের সঙ্গে টানাপোড়েনের পেছনে এটিও একটি কারণ।
এত সব মতপার্থক্যের কারণে কখনই জোরালো হয়নি সৌদি-ইরান সম্পর্ক। উল্টো সৌদি আরবে একজন শিয়া ধর্মীয় নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে কেন্দ্র করে রিয়াদ-তেহরানের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায় আঞ্চলিক এই দুই পরাশক্তির। তবে ২০১৬ সালে ছিন্ন হওয়া সেই সম্পর্ক জোড়া লাগে গেল বছর।
এরপর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও ফিলিস্তিন ও লেবানন ইস্যুতে দুই দেশের অবস্থান দুই মেরুতে। ফিলিস্তিন ও লেবানন ইস্যুতে সরাসরি নিজেদের জড়িয়েছে ইরান, তবে সৌদি চাইছে সাইড লাইনের বাইরে থেকে খেলতে। এর পেছনে অবশ্য সৌদির কৌশলগত কারণও আছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই মধ্যপ্রাচ্যের ইস্যু সমাধান করতে চায় সৌদি।
এবার নেতানিয়াহুকে বিপদে ফেলতে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয়েছে ইরান। ফিলিস্তিন ও লেবাননে সম্প্রতি ইসরায়েল যে সাফল্য পেয়েছে, তা মলিন করে দিতেই তেহরান নিজেদের দিকে রিয়াদকে টেনে আনছে। এরই অংশ হিসেবে লোহিত সাগরে সৌদির সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর পরিকল্পনা করেছে ইরান।
সৌদির পক্ষ থেকে এখনো এমন খবর নিশ্চিত করা হয়নি। তবে ইরানের দাবি সত্য হলে আঞ্চলিক দুই পরাশক্তি এবারই প্রথম এক সঙ্গে মিলে সামরিক শক্তি দেখাবে। এমন কিছু ঘটলে নেতানিয়াহুর পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাবে। আর তাই ইরানের করা ওই দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। তেলআবিবের ধারণা, এমন কিছু ঘটবে না।
এর আগে ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার অ্যাডমিরাল শাহরাম ইরানি জানান, লোহিত সাগরে যৌথ মহড়ার প্রস্তাব দিয়েছে সৌদি আরব। এ নিয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিরা মাঠে নেমে পড়েছেন। কীভাবে এই মহড়ার আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন তারা। অবশ্য ইরান এমন দাবি করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি সৌদি।