একসময় ছিল প্রাণের স্পন্দন, ছিল কোলাহল। কিন্তু কোলাহলে ভরা সেই শহর হারিয়ে যায় কালের বিবর্তনে। তবে হারিয়ে যাওয়া সেই শহরের খোঁজ মিলেছে আবারও। প্রায় পাঁচ দশক পানির নিচে ডুবে থাকার পর উঁকি দিয়েছে শহরটি। ৩০০ বছরের পুরোনো সেই শহরে রয়েছে আনন্দ, হাসি-কান্নার গাথা।
সাড়ে ৭ হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ফিলিপাইন। সাগরের বুক চিড়ে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বীপ রাষ্ট্রটির বিভিন্ন এলাকার জলাধার প্রচণ্ড গরমে শুকিয়ে যায়। গত এপ্রিল মাসে তেমনই এক ঘটনায় বেরিয়ে আসে ৩০০ বছর পুরোনো একটি শহর। ফিলিপাইনের নুয়েভা এচিজা অঞ্চলের পান্তাবানগানে ওই শহরের অবস্থান। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জেগে ওঠার পর ওই শহরের একটি পুরোনো চার্চ দৃশ্যমান হয়েছে।
আসলে কয়েক দশক ধরে পানির নিচেই ডুবে ছিল পান্তাবানগানের এই শহরটি। তবে সেখানকার একটি জলাধার প্রচণ্ড গরমের কারণে শুকিয়ে যাওয়ার পর পুরোনো শহরটির দেখা মেলে। শহরটি ভেসে ওঠার পর এখন সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। দৃশ্যমান হওয়া এই শহরের মাটিতে বিভিন্ন ফাটল দেখতে পাওয়া যায়। তবে অজানা এই শহরে রহস্য জানতে পর্যটকদের আগ্রহের যেন শেষ নেই।
হঠাৎ ভেসে ওঠা এই শহর দেখতে ছুটে এসেছেন রোওয়েল লুসেনা নামের একজন পর্যটক। লুসেনার ভাষায়, পুরোনো এই শহর দেখতে তার মতো আরও অনেকই আসছেন দূরদূরান্ত থেকে। শহরে দেখার মতো কিছু না থাকলেও ভাঙাচোরা ওই চার্চ নিয়ে পর্যটকের আগ্রহের কমতি নেই। পান্তাবানগান শহরের জন্য একটি জলাধার করার পর ১৯৭০-র দশকে ডুবে যায় পুরোনো ওই শহরটি।
বাঁধ দিয়ে ওই জলাধার তৈরি করা হয়। এরপর ডুবে গেলেও এবার ভেসে ওঠার পর সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রকাশ্যে আছে শহরটি, এমনটাই দাবি করেছে স্থানীয় মিডিয়া। চলতি বছর পান্তাবানগান বাঁধের পানির স্তর গেল ৭ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ কমে যায়। স্বাভাবিকভাবে এই জলাধারের পানি ২০০ মিটারের বেশি থাকে।
সামনে শীত আসছে এশিয়ার এই অঞ্চলে। তবে বছরের শুরুর দিকে প্রচণ্ড গরমে পুড়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। তখন গরমের তীব্রতার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কোনো কোনো দেশে জারি করা হয়েছিল স্বাস্থ্য সতর্কতা। সে সময় জেগে উঠেছিল প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো এই শহর।