দিপক রায় নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ আট মাস পর বিদ্যালয় পরিদর্শন ও কমিটির সদস্যদের সাথে সভা করতে এসে পাওনাদারের হামলার শিকার হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। মঙ্গলবার সকালে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্তে চতুর্থ শ্রেণীর ৫টি পদে সভাপতি বরাবরে দরখাস্ত আহ্বান করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী সভাপতি বরাবরে ৫টি পদে ২৮ জন আবেদন করেন বলে জানা যায়।
এরই এক পর্যায়ে নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের উজিয়াল প্রামাণিক পাড়া গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দিন প্রামানিকের পুত্র বদরগঞ্জ মহিলা কলেজে সহকারী অধ্যাপক ও চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল হক প্রামাণিক একই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ প্রামাণিকের পুত্র ডালিম প্রামাণিক ও লেবু প্রামাণিকের কাছ থেকে নগদ ১২ লক্ষ টাকা নেয়।
পরবর্তীতে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় চাকরি দিতে ব্যর্থ হয় সভাপতি। এরপর থেকেই টাকা ফেরত দিতে টালবাহানা শুরু করেন তিনি। টাকা ফেরত দিতে না পারায় ক্ষুদ্ধ হয় ডালিম ও লেবু। তারা সুযোগ খুজঁতে থাকে আনোয়ারুলকে পাকরাও করে টাকা আদায়ের। তাদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় দীর্ঘদিন ৮ মাস থেকে বিদ্যালয় ও নিজের গ্রামের বাড়িতেও আসা বন্ধ করে দেন আনোয়ারুল। মঙ্গলবার সকালে আনোয়ারুল কমিটির সভায় উপস্থিত হতে চিলাপাক উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতির উপস্থিত হওয়ার খবর প্রকাশ হলে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সেখানে থানা পুলিশ গেলেও পুলিশ উপস্থিত হওয়ার আগেই সভাপতি বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থানরত শিক্ষকদের সাথে কুশল বিনিময়ের মুহুর্তে পাওনাদার ডালিম প্রামাণিক ও লেবু প্রামাণিক তার কাছে পাওনা টাকা দাবী করলে উভয়ের মাঝে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ের উভয়পক্ষের লোকজন জরো হলে সেখানে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সভা স্থগিত করে সভাপতি আনোয়ারুল হককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এবিষয়ে সভাপতি আনোয়ারুল হক বলেন, ডালিম ও লেবু এই এলাকার গুন্ডা। তারা আমাকে অপদস্থ করার জন্যই এ ঘটনা ঘটেছে। নিয়োগে কোন লেনদেন করা হয়নি। নিয়োগটি অধিদপ্তরের নির্দেশনায় স্থগিত হওয়ার সুযোগে ডালিম ও লেবু আমার কাছে টাকা দাবী করে আসছে।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আনোয়ারুল আমাদের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করেছিল তাই তাকে আমরা নিরাপদে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। তবে সেখানে যে ওনার উপর হামলা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। তিনি লিখিত অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।