ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়া ও নিম্নচাপে কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা উপড়ে ও ঝড়ে ধান ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ চাপায় মহেশখালীর কালামারছরা ইউনিয়নে সাঈদ নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে ওই যুবক আহত হন। এরপর শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে ঝড়ের কবলে পড়ে তার (সাঈদ) বাড়িতে বড় একটা গাছ উপড়ে পড়লে বাড়ির একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে যুবক সাঈদ গুরুতর আহত হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাঈদের মৃত্যু হয়। এদিকে একই দিন সন্ধ্যায় সদরের চৌফলদণ্ডি এলাকায় সাগর থেকে ফেরার সময় একটি মাছ ধরা ইঞ্জিন চালিত নৌকা (ট্রলার) মহেশখালী চ্যানেলে ডুবে গেলে আমির হোসেন কামাল নামে আরেক জেলের মৃত্যু হয়।’
এডিসি আরও বলেন, ‘ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে গভীর সাগরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়া ৩২ মাঝিমাল্লাসহ দুটি মাছ ধরা ট্রলার শনিবার দুপুরে উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড। দুটি ট্রলারই কক্সবাজারের।’
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ কবির হোসেন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ঝড়ের আঘাতে মহেশখালীতে ২০ হেক্টর পানের বরজ, ১৪৫ হেক্টর আমন ধান, ১৮০ হেক্টর শীতকালীন আগাম শাকসবজি ও ১১ হেক্টর সরিষা ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।’
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শুক্রবার টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও শনিবার থেকে তা আবারও শুরু হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে কেয়ারি সিন্দাবাদ নামে একটি জাহাজ সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দেশ্যে টেকনাফ ছেড়ে যায়।
টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকদের জাহাজটিতে করে শনিবার বিকেলে টেকনাফে নেওয়া হবে। সাগরে প্রথমে নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় গত দুই দিন ধরে সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে গিয়ে আটকা ছিলেন প্রায় ৪০০ পর্যটক।’
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র প্রভাবে বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি বৃহস্পতিবার দিনরাত বিরাজমান ছিল। বৃষ্টির তোড়ে টেকনাফের হ্নীলার মৌলভীবাজার এলাকায় একটি নির্মাণাধীন মাটির দেয়াল চাপায় একই পরিবারের চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।