নিজস্ব প্রতিবেদক: শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার আবাসিক এলাকায় তীব্র গ্যাস সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে আশুলিয়ার জিরানী বাজার, টেঙ্গুরী ও কোনাপাড়া এলাকায় গ্যাস নেই বলে অভিযোগ এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের।
এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সব এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষসহ পোশাক শ্রমিকরা। আবার চুলা না জ্বললেও প্রতিমাসে গ্যাস বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের।
মাস ছয়েক আগে গভীর রাতে কিছু সময়ের জন্য গ্যাস আসলেও এখন পুরোপুরিই গ্যাস আসা বন্ধ রয়েছে। তবে এ পর্যন্ত গ্যাসলাইন মেরামতের জন্য কালাম নামের এক ঠিকাদারকে দুইবার এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে টাকা উঠিয়ে দিলেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ তাদের।
আশুলিয়ায় আবাসিকে গ্যাস সংকট, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড আশুলিয়া জোনাল বিপণন অফিস বলছে, ওই এলাকার গ্যাস লাইন মেরামতের জন্য ফাইল হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। এ্যাপ্রুভাল হলেই কাজ শুরু করা যাবে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে এ এলাকার মানুষ গ্যাস পাচ্ছেন না। গ্যাস না পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পোশাক শ্রমিকদের। তারা সারাদিন পরিশ্রম করে বাসায় এসে গ্যাস না পাওয়ায় ঠিকমত রান্না করতে পারেন না। অনেকে আবার লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায় রান্না করছেন। গেল ছয় মাস গভীর রাতে মাঝে মধ্যে গ্যাস আসতো। আবার লাইন দিয়ে নোংড়া পানি বের হতো। কিন্তু এখন কোন সময়েই গ্যাস আসছে না। দীর্ঘ দিনের এ সমস্যায় কোনো প্রতিকার নেই তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের। তবে প্রতি মাসেই গ্যাস বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। এদিকে আবার গ্যাস সিলিন্ডার বা এলপিজির দাম বেড়ে গেছে। তাই এলপিজি কিনেও রান্না করতে পারছেন না পোশাক শ্রমিকরা।
তারা বলেন, লাকড়ির দামও বেশি। কিন্তু এলপিজির চেয়ে কিছু কম। তাই, বাধ্য হয়েই লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায় রান্না করতে হচ্ছে। এসব এলাকায় যারা বসবাস করেন, তাদের অধিকাংশই ভাড়াটিয়া। তারা পোশাক শ্রমিক। তারা যা বেতন পান তা দিয়ে বেঁচে থাকাটাই তাদের জন্য কঠিন, এলপিজি দিয়ে রান্না করার সামর্থ তাদের নেই। একই চিত্র কোনাপাড়া ও টেঙ্গুরী এলাকাতেও।
শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আট নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার করিম চিশতি জানান, গ্যাস না পাওয়ায় অনেক ভাড়াটিয়া চলে গেছে। ফলে অনেক বাসা এখন খালি পড়ে আছে। এতে বাড়ির মালিকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। গ্যাস সঙ্কট নিরসনে এলাকাবাসীর পক্ষে তিনি গ্যাস অফিসে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান পাননি। শিগগিরই এ সঙ্কট নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের আট নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মান্নান হোসেন বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রবিউশন কোম্পানির আশুলিয়া আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মো. সায়েম মুঠোফোনে জানান, ওই এলাকার গ্যাস লাইন সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অনেক আগেই লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনটি হেড অফিসে রয়েছে। সেখান থেকে এ্যাপ্রুভাল পাচ্ছেন না। এ্যাপ্রুভাল পেলেই কাজ ধরা যাবে।
তবে কবে নাগাদ ফাইল এ্যাপ্রুভাল হতে পারে বিষয়টি জানতে চাইলে, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান।