কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবিতে সংগঠনটির একাংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করেছে। আজ শনিবার দুপুরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান নয়ন।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, গঠনতন্ত্র না মেনে কোনরূপ যাচাই বাছাই ও নেতৃত্বের দক্ষতা মূল্যায়ণ না করেই কেন্দ্রীয় কমিটি ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিন সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেয়। এতে আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনকে সভাপতি, ফয়েজ উমান খানকে সাধারণ সম্পাদক ও লুৎফুর রহমান নয়নকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। অথচ গঠনতন্ত্রের ২১ (ক) ধারা অনুযায়ী সম্মেলনের মাধ্যমে এক বছরের জন্য জেলা কমিটি অনুমোদন দিতে হয়।
তৎকালীন ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য বারবার নির্দেশ দিলেও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তা উপেক্ষা করছে বলে অভিযোগ করা হয় । অভিযোগে আরও বলা হয়, বর্তমান জেলা কমিটি প্রায় সাড়ে তিন বছরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে ব্যর্থ হয়। উপরন্তু টাকার বিনিময়ে জেলার বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনের নামে অছাত্র, বিবাহিত, মাদকাসক্ত এবং বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্তদের দ্বারা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। তাড়াইল উপজেলা কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন সিরাজীকে শিবির কর্মী উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মৃত্যুতে সিরাজী তার ফেসবুক আইডি থেকে শোক ও বেদনা প্রকাশ করে পোস্ট দেন। অথচ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উমান খানের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অটো ও সিএনজি স্ট্যান্ডে অনৈতিক বাণিজ্য, ভূমিদস্যুতা, নারী কেলেংকারীসহ বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় অনেক নেতাকর্মী তাদের হামলার শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। তাদের কর্মকাণ্ডে সংগঠনটি বর্তমানে ধ্বংস হতে চলেছে উল্লেখ করে অবিলম্বে কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি অনুমোদনের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতা তানিম ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম স্বপন, সাব্বির আহমেদ মুন্না, কামরুল ইসলাম রতন, শাওন আহমেদ নিলয়, কাজী আবেদীন সোলেমানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এদিকে সাড়ে তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে না পারার বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন বলেন, করোনার কারণে প্রায় দুই বছর লকডাউন ছিল। ফলে কোন কার্যক্রম করা যায়নি। এখন উপজেলা কমিটিগুলো করা হচ্ছে। এরপরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আনিত অন্য অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।