শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
spot_img
Homeখুলনা৯২ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার, দুশ্চিন্তা নিয়ে ফিরছেন বনজীবীরা

৯২ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার, দুশ্চিন্তা নিয়ে ফিরছেন বনজীবীরা

সুন্দরবনের বন্য প্রাণী এবং নদী–খালের মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় আগামী ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনের দুয়ার। এ সময় পর্যটক প্রবেশ ও সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।

নিষেধাজ্ঞাকে সামনে রেখে গহীন সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরতে শুরু করেছে উপকূলীয় অঞ্চলের বনজীবী হিসেবে পরিচিত জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালরা। তবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ৯২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। বনজীবীরা বলছেন, বন্ধের দিনগুলোতে তাঁদের জন্য সরকারি যে সহায়তা দেওয়া হয়, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সরকারি সহায়তার বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি তাঁদের।

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে। সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার, যা সমগ্র সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারণে ১ জুন থেকে ৯২ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের অনুমতি বন্ধ রাখে বনবিভাগ।

আজ মঙ্গলবার সকালে খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর তীরে গিয়ে দেখা গেছে, সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরেছে শতাধিক মাছ ধরা নৌকা। এতে নৌকা থেকে মাছ ধরার জালসহ অন্যান্য মালামাল সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। কেউ কেউ আবার নৌকা মেরামত জন্য বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর উঠিয়ে রাখছেন।

সুন্দরবনসংলগ্ন ৪ নম্বর কয়রা গ্রামের বনজীবী আকরাম হোসেন বলেন, টানা ছয় দিন সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরে সকালে লোকালয়ে ফিরেছেন। খুব বেশি মাছ ধরতে পারেননি। সামনের ৯২ দিন বন্ধের সময় সংসার চালানোর মতো সঞ্চয় করা টাকা নেই। এ নিয়ে বিপদে আছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কয়রার এক হাজারের বেশি বনজীবী নৌকা নিয়ে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন বনজীবীদের সংগঠন সুন্দরবন অঞ্চল সহব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াসাদ আলী। তিনি বলেন, অন্য জেলে নৌকাগুলোও কাল বুধবার বিকেলের মধ্যে ফিরে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষেধ। জেলে, বাওয়ালি, পর্যটক কেউই সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমন অবস্থায় জেলে, বাওয়ালি, পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সরকারি সহায়তা প্রদানের দাবি জানান তিনি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়রার বানিয়াখালী, কাশিয়াবাদ ও কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনসহ খুলনা রেঞ্জের আওতায় ২ হাজার ৯০০টি নৌকার সুন্দরবনে প্রবেশের বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১৩ হাজার ৫২৬ জন। নিষেধাজ্ঞার সময় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এসব জেলেদের ৩ মাসে ৮৬ কেজি চাল দেওয়া হয়।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন