খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধারকৃত সেই নারীর দ্বিখণ্ডিত মরদেহের পরিচয় মিলেছে। সোমবার (৭ নভেম্বর) নিহত নারীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে র্যাব-৬। ওই নারীর নাম কবিতা রানী। তিনি সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার কুতের বিল এলাকার কালিপদ বাছারের মেয়ে।
এ ঘটনায় কবিতার প্রেমিক আবু বক্করকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন র্যাব-৬ এর মূখপাত্র লে: কর্ণেল মোসতাক আহমদ।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আবু বক্কর তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে ১ নং গোবরচাকা ক্রসরোড রাজু নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ৩ বছর ধরে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করছে। স্বপ্না তার বিবাহিত স্ত্রী নয়। সে নগরীর প্রিন্স হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত। একটি সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও কবিতার সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় আবু বক্কর।
মাত্র ৫ দিন আগে কবিতা ও আবু বক্করের মধ্যে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রে তাদের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। গত শনিবার স্বপ্না ডিউটিতে থাকায় আসামি ভুক্তভোগীকে তার ভাড়া ঘরে নিয়ে আসে। ওই দিন তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। কবিতা উচু স্বরে কথা বলতে থাকলে একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে আবু বক্কর। পরে লাশটি গুম করার জন্য রান্নাঘর থেকে বটি এনে মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। মাথাটি পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখে। পরে দু’হাতের কব্জি কেটে ফেলে। আর দেহের বাকি অংশ একটি বক্সে ঢুকিয়ে রাখে।
লে: কর্ণেল মোসতাক আহমদ আরও জানান, ওই রাতেই আবু বক্কর কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে রূপসা নদী পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রোববার রাতে আসামি আবু বক্করের অবস্থান নিশ্চিত করে। এরপর তাকে ও তার কথিত স্ত্রীকে গাজীপুর জেলার বাসন থানাধীন চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে রোববার সকাল ১১টার দিকে খুলনা মহানগরীর ১নং গোবরচাকা ক্রস রোড তেতুল তলায় ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর দ্বিখন্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে আসামির স্বীকারোক্তি মোতাবেক নগরীর গোবরচাকা এলাকার একটি সরু স্থান থেকে লাশের বিছিন্ন হওয়া দু’হাতের কবজি উদ্ধার করেছে র্যাব।