টানা দুই মাস ধরে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় শিক্ষকদের ক্লাস পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। কোমলমতি শিশুরাও হাঁটুপানি ঠেলে স্কুলে যেতে হিমশিম খাচ্ছে। এরই মধ্যে ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের চলাচলের রাস্তাঘাটসহ শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ব্যাঙ, সাপ, পোকামাকড়ের আনাগোনা শিশুদের মনে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নে ৬৭নং বিল বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে নিমজ্জিত আছে। ইউনিয়নের বিল অঞ্চলে গড়ে ওঠা গ্রামের মধ্যে অবস্থিত বিদ্যালয়টি অবহেলিত ও বঞ্চিত জনপদের শিশুদের শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত করতে ভূমিকা রেখে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অতিবৃষ্টির কারণে এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্কুলে যাতায়াতের রাস্তাও হাঁটুপানিতে তলিয়ে গেছে। জরাজীর্ণ ভবনে কর্তৃপক্ষ ক্লাস পরিচালনা করে আসছে।
দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ ভবন অপসারণ করে নতুন ভবন নির্মাণের দাবির প্রেক্ষিতে এর জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলেও এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বর্তমান ভবনের ৩টি কক্ষে কোনো রকমে ২ শিফটে ক্লাস চালানো হচ্ছিল। কিন্তু প্রায় ২ মাস আগে থেকে বৃষ্টির পানি তাতে বাধ সেধেছে। ক্লাস রুমের মেঝে একরকম পানিতে থৈ থৈ করছে। এ অবস্থায় সেখানে ক্লাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) তৃপ্তি রানীর উদ্যোগে সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন, জগদীশ মণ্ডল ও সৌরভ সরদার পানিতে ভিজেই ক্লাস নিয়ে যাচ্ছেন। সবমিলিয়ে ঠিকঠাক ক্লাস পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক দীপঙ্কর বাছাড় দীপু বলেন, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকার কারণে অতি বৃষ্টির ফলে এলাকাসহ স্কুলটি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা যেমন স্কুলে যেতে পারছে না তেমনই ক্লাস রুমে বসার পরিবেশ না থাকায় ঠিকঠাক ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী বলেন, বিদ্যালয়টিতে ৭৯ শিক্ষার্থী থাকলেও পানির কারণে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম থমকে গেছে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করার অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মন কালবেলাকে বলেন, বিল বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো আরও দুটি বিদ্যালয় জলমগ্ন আছে। এসব বিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পানি নিষ্কাশনের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি।