স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ৬ থেকে ৯ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। উল্লিখিত তারিখে নির্বাচন করতে প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে ইসি। চলতি নভেম্বরের মাঝামাঝি ঘোষণা হতে পারে তফসিল।
নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে আগামী ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা। এরপরের সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। অবশ্য এটি নিয়ে কমিশনের ভেতর ভিন্নমতও রয়েছে।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে হরতাল–অবরোধের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। অন্যদিকে চলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযান। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা একের পর এক গ্রেপ্তার হচ্ছেন। রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমেই সংঘাতময় হয়ে উঠছে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে তারা। অমোচনীয় কালি ও স্ট্যাম্প প্যাড ছাড়া অন্যান্য নির্বাচনী সরঞ্জামের বেশির ভাগ ইতিমধ্যে জেলা নির্বাচন কার্যালয়গুলোতে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। এবার তফসিল ঘোষণার সপ্তাহখানেক আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করার চিন্তা আছে।
জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বিবেচনায় নিচ্ছে ইসি। তবে পরিস্থিতি যা–ই হোক, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করা থেকে পিছু হটার কোনো চিন্তা নেই কমিশনের। এবার প্রয়োজনে নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রগুলোতে আগের তুলনায় বেশিসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। সাধারণত ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্য থাকেন একজন করে। এবার তা দুজন করা হতে পারে। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রের বাইরেও আগের চেয়ে বেশিসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন।
প্রয়োজনে ভোটের পরের ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রাখার পরিকল্পনা আছে তাদের।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি একাদশ সংসদের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবে ২৯ জানুয়ারি। এর আগের ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব জাহাংগীর আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলমান। নভেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে। ভোট কবে, সে বিষয়ে এখনো কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়নি।
তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আগে থেকে যে প্রশ্ন ছিলো, সেটি সাম্প্রতিক সময়ে আরও জোরালো হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে গত ৪ নভেম্বর ইসির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনাতেও বিষয়টি জোরালোভাবে এসেছিলো। সেদিন ইসি ৪৩টি দলকে আলোচনার জন্য ডাকলেও বিএনপিসহ ১৭টি দল অংশ নেয়নি। যেসব দল আলোচনায় অংশ নিয়েছে, তাদের মধ্যেও কয়েকটি দল নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের ভেতরেও চলমান সংঘাতময় পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
তবে নির্বাচনের বাইরে অন্যকিছু ভাবছে না ইসি। কারণ, গত ৩১ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, প্রতিকূল পরিবেশ হলে নির্বাচন হবে না, এমন ভুল-বোঝাবুঝি যেন জনগণের ভেতর না থাকে। নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে এবং নির্ধারিত পদ্ধতিতেই অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।