শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
spot_img
Homeফেসবুক থেকেচাপের মুখে পড়ে চুপচাপ জিএম কাদের

চাপের মুখে পড়ে চুপচাপ জিএম কাদের

তিনটি মামলায় চাপের মুখে পড়েছেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন ফরমে স্বাক্ষর দিতে পারেননি তিনি। প্রতিটি মামলার বাদি তার খুব কাছের নেতারা। একদা যারা তাঁর পাশে থাকতো সব সময়।

জাপা থেকে বহিষ্কৃত নেতা সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধার মামলাটি আমলে নিয়ে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের দলীয় যাবতীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার অস্থায়ী আদেশ দেন। ১৬ নভেম্বর ২০২২ তারিখে জি এম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। সেই সাথে লিখিত জবাব দাখিল ও মূল মামলার শুনানির জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করে দেয়া হয়েছে।

জিয়াউল হক মৃধার মামলাটিতে উল্লেখ্য করা হয়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিবাদী জিএম কাদের হাইকোর্ট বিভাগের একটি রিট মামলা বিচারাধীন থাকাবস্থায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ওই বছর ২৮ ডিসেম্বর কাউন্সিল করে নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের কাউন্সিলসহ চলতি বছর ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের করা সকল বহিষ্কার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করতে এবং হাইকোর্ট বিভাগের রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পরবর্তী কাউন্সিল স্থগিত রাখতে মামলাটিতে আদেশ চাওয়া হয়েছিল।

জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন জাপার প্রেসিডিয়ামের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি। তিনিও চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদেরকে অবৈধ ঘোষণার আদেশ চেয়েছেন। এ মামলায় ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ইদ্রিস আলী নামের অন্য এক জাপা নেতা জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সম্পত্তির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টির চারজন মহিলা সংসদ সদস্যর মনোনয়ন কার্যক্রমে ১৮ কোটি দশ লাখ টাকা উৎকোচ নেন জি এম কাদের। উৎকোচের বিনিময়ে ওই চার নারীকে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। অভিযোগটি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

জাপা নেতাকর্মীরা, আওয়ামীলীগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই ভেবে গালি দিতে পারেন যে, এই সরকার জাতীয় পার্টিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জিএম কাদেরকে মামলা দিয়ে থামিয়ে রাখতে চাচ্ছে। একটু গভীরে গিয়ে দেখুন ! যারা মামলা করেছে তারা সবাই জাপার নেতা। যারা এখন বহিস্কৃত। আপনি আমি যে কাউকে হঠাৎ পদচ্যুত করা হলে ক্ষেপে উঠবার কথা।

ক্ষেপে উঠা বহিস্কৃত জাপা নেতারা মামলা করে নিজেদের সম্মান টিকিয়ে রাখার যুদ্ধে নেমেছে। জাতীয় পার্টির দলীয় খেলা ক্রিকেট খেলার মতো। শেষ বল না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা কিংবা মন্তব্য করা যায় না। হাতে অনেক সময় আছে, দেখা যাক, হয়তো কিছু হবে , হয়তো হবে না।

উল্লেখ্য যে, এ বছরের ৫ মার্চ জাপা গাজীপুর মহানগর কমিটির উপদেষ্টা আতাউর রহমান সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুর শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক রফিকুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মো. আজিজকে বহিষ্কার করেন জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপিকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং ১৭ সেপ্টেম্বর অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাকেও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের।

লেখক-

মহিউদ্দিন মখদুমী

বিভাগীয় প্রতিনিধি,মানবকন্ঠ,রংপুর। 

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন