রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকইরানে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ: নিহত বেড়ে ৫১

ইরানে হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ: নিহত বেড়ে ৫১

হিজাব ঠিকমতো না পরায় পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনির মৃত্যু ঘিরে ইরানে সহিংস বিক্ষোভ অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। এই ৮ দিনের প্রতিদিনই দেশজুড়ে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হচ্ছে। সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে- দু’পক্ষের সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৫১ জনেরও বেশি বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।

গত ১২ সেপ্টেম্বর মাথায় হিজাব না থাকায় রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মাশা আমিনি। গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চারদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাশার। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াই তার মৃত্যুর কারণ; তবে বিক্ষোভকারী, মাশার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ- হেফাজতে মাথায় গুরুতর আঘাত করার পরই জীবনসংকটে পড়েন তিনি এবং ওই আঘাতের জেরেই তার মৃত্যু হয়।

ইরানের স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী পড়াশোনা সূত্রে ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে থাকতেন মাশা, গত সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে তেহরান এসেছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কুর্দিস্তানে। পরে দ্রুততার সঙ্গে অন্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে সেই বিক্ষোভ। আইএইচআরের তথ্য অনুযায়ী, ইসফাহান, মাশহাদ, শিরাজ, তাবরিজসহ ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে বর্তমানে বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি- মাশা আমিনির মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নারীদের কঠোর পোষাকনীতি ও নৈতিক পুলিশ বাতিল করা।

বিক্ষোভ কমাতে ইতোমধ্যে দেশে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছে ইরানের সরকার, দেশটির সামরিক বাহনী মাঠে নামার হুমকি দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে সরকারপন্থীরা হিজাবের পক্ষে আন্দোলন শুরু করেছেন। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে তাদের আন্দোলন। কিন্তু সরকারের এ সব পদক্ষেপ তেমন কাজে আসছে না। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- শুক্রবার সারাদিন রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরের সড়ক দখল করে আন্দোলন করেছেন সরকারপন্থীরা, সন্ধ্যার পর তারা সরে গেলে ফের সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন সরকারবিরোধীরা।

ইতোমধ্যে তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে একাধিক পুলিশ স্টেশন ও সরকারি স্থাপনা বিক্ষোভকারীরা জ্বালিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার ইরানের বাবল শহরে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি সম্বলিত একটি বিশাল বিলবোর্ড পুড়িয়ে দিয়েছেন সরকারবিরোধীরা।

এ ছাড়া রাজধানী তেহরানে ইরানের আধাসামরিক বাহিনী বাসিজ মিলিশিয়ার একটি ঘাঁটি পুড়িয়ে দেয়ার চিত্রও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর আঘাতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের রক্তাক্ত হওয়ার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ফুটেজও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ইরানের সরকারও বিক্ষোভ দমনে বেশ কঠোর মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছে।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন