৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিট আমলে নিয়ে সোমবার (১০ জুন) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। সেসব অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, উজ্জ্বল কুমার নন্দি, পূর্ণিমা রানী হালদার, রাজিব সোম, রতন কুমার বিশ্বাস, ওমর শরীফ, নূরুল আলম, নাসিম আনোয়ার, নূরুজ্জামান, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ আবুল হাশেম, জহিরুল আলম, আনোয়ারুল কবির, নওশেরুল ইসলাম, বাসুদেব ব্যানার্জি, রাশেদুল হক, সৈয়দ আবেদ হাসান, নাহিদা রুনাই, আল মামুন সোহাগ, রাফসান রিয়াদ চৌধুরী ও রফিকুল ইসলাম খান।
তাদের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আবেদ হাসান ও ব্যবস্থাপক রাফসান রিয়াদ চৌধুরী কারাগারে আছেন। এদিন তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এই মামলায় পি কে হালদারসহ ১৯ জন পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে আজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি পি কে হালদারসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান অ্যানন কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরে বিভিন্নভাবে ওই অর্থ একাধিক কোম্পানি ও ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করে পাচার করেন।
গত ২৯ এপ্রিল পি কে হালদারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পি কে হালদার এবং তার ৮৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৫২টি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর পি কে হালদারকে ২২ বছরের সাজা দেন ঢাকার আদালত।
পরে ২০২২ সালে ১৪ জুন পি কে হালদারকে তার চার সহযোগীসহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বর্তমানে তিনি সেখানেই কারাবন্দি অবস্থায় মায়ের শেষকৃত্যের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে রয়েছেন।