সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশ এখন একধাপ এগিয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইজিপি বলেন, এই দেশে এক সময় জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের হলিখেলা শুরু হয়েছিল। একসঙ্গে ৬৩ জেলায় বোমা বিষ্ফোরণ হয়েছিল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ, যারা বিভিন্ন চাকরি করতেন তাদের ট্যাক্স দিতে হয়েছিল বিভিন্ন বাহিনীকে। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে লোকবল বৃদ্ধি করে আমাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। দেশকে ডিজিটালাইজেশন করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে জঙ্গিরা বা সন্ত্রাসবাদীরা যেখানেই সমবেত হতে চেষ্টা করে বা ওরা যেকোনো কিছু করার আগেই আমরা সবসময় একধাপ এগিয়ে থাকি। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কারণে।
আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাপোর্টের কারণে দেশে এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে।
রংপুরের মানুষ শান্তিপ্রিয় ও ভালো উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, রংপুরের মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই এলাকার মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বজায়ে তারা যথেষ্ট আন্তরিক। এ কারণে সবচেয়ে ভালো অফিসারদের রংপুরে দিয়ে থাকি। যারা রংপুরের মানুষের আবেগ বুঝতে পারেন আমরা তাদের এখানে দিয়ে থাকি।
মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আগে মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলার, এখন প্রায় ৩০০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। এখন সৈয়দপুর থেকে প্রতিদিন ১৮টা ফ্লাইট চলাচল করে। মানুষের আয় বেড়েছে, আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার কারণে এবং প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সেক্টরকে যেভাবে উজ্জীবিত করেছেন এরমধ্য দিয়ে দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমের জোয়ার শুরু হয়েছে।
টেকসই নিরাপত্তা থাকলে টেকসই শান্তি থাকবে আর টেকসই শান্তি থাকলে টেকসই উন্নয়ন হবে জানিয়ে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা রংপুরবাসীর কাছে একটু বেশি। তারা বিভিন্ন কাজে আমাদের সহায়তা করেন। তাদের সহায়তা ছাড়া একক প্রচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব না।
এই এলাকায় পর্যটন বিকশিত হচ্ছে। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি আরও এগিয়ে যেতে হবে।
সমাজ থেকে মাদক নির্মূলে অভিভাবকসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সহযোগিতা কামনা করে আইজিপি বলেন, আভিযানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে কার সঙ্গে মেলামেশা করেছে সেটা নজর রাখতে হবে।অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়ানো ও প্রত্যেক নাগরিককে নিজের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আইজিপি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট পুলিশ গড়তে হবে। সেই স্মার্ট পুলিশ গড়তে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
আগামীতে উন্নয়ন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে, স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট পুলিশ গড়তে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ প্রধান।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেন, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ড (ডিআইজি) বাসুদেব বনিক, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হাসিবুর রশীদ, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান, পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, র্য্যাব-১৩ অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, রংপুর মহানগর কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু এবং মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা।এর আগে সকালে সুরভী উদ্যানের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্য্যালি বের হয়ে টাউন হল মাঠে এসে পৌঁছায়।