রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeরাজনীতিএদেশের সাধারণ মানুষকে বিএনপি শত্রু মনে করে: শেখ পরশ

এদেশের সাধারণ মানুষকে বিএনপি শত্রু মনে করে: শেখ পরশ

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন,যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়, তারা শেখ হাসিনার সাথে আছে, উন্নয়নের সাথে আছে। এই উন্নয়ন এবং দেশের শান্তি বিএনপির ভাল লাগে না। এটাকে বিনষ্ট করাই তাদের মুল উদ্দেশ্য। তাদের প্রধান শত্রু এদেশের জনগণ। কারণ তারা একাত্তরে পরাজিত হয়েছিল এদেশের জনগণের কাছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ২০০৫ সালের এই দিনে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ ও কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে এমন মন্তব্য করেন তিনি। উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সঞ্চালনা করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ১৫ই আগস্টের মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের পিছনে ষড়যন্ত্র ছিল-আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করা, বাঙালির পরিচয় বিনষ্ট করা, ষড়যন্ত্র ছিল আমাদের স্বাধীনতার মূলমন্ত্রগুলো ধ্বংস করা, আমাদের গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, অর্থনীতির স্তম্ভগুলো ধূলিসাৎ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন,১৫ই আগস্টের মূল মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য হত্যার মাধ্যমে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে। সেই হত্যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান। রাতের অন্ধকারে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে যারা সপরিবারে হত্যা করে, নারী ও শিশুদেরকে যারা রক্ষা দেয় নাই তারা আবার বাংলাদেশের মাটিতে রাজনৈতিক দল করে গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। আমাদের কথা বলার ভাষা থাকে না।

তিনি আরও বলেন,আমরা ২১ বছর কোন বিচার পাই নাই। দ্বারে দ্বারে দৌঁড়াতে হয়েছে। আমি মনে করি জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে আল্লাহ বিচার করেছে। কোন মানুষের পক্ষে ঐ দুর্বিসহ, অপরিসীম সাহস দেখানো সম্ভব না। জননেত্রী শেখ হাসিনার ৩৫ বছরের অপেক্ষার মাধ্যমে, বন্দুকের নলকে উপেক্ষা করে, লোভ-লালসা বিসর্জন দিয়ে, জীবনের ওপর হুমকি বলেন, আক্রমণ বলেন সেগুলো উপেক্ষা করে তিনি এই খুনিদের বিচার করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট তারা দেশের ৬৩ টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা করলো, তারা আঘাত করলো প্রেসক্লাবে কারণ তারা ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত যে পরিমাণ অত্যাচার, খুন, হত্যা করেছে, আওয়ামী লীগের ২৫ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। তাদের এই সকল হত্যাকাণ্ড, সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার, সাধারণ মানুষের আর্তনাদ যেন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ না করে এই কারণেই প্রেসক্লাবে বোমা হামলা চালায়। তারা আঘাত করলো বিচারালয়ে। যেন বিচারক এবং সাধারণ মানুষ ভয় পায়। ভয়-ভীতি প্রদর্শন, সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র এইগুলোই বিএনপির রাজনীতির অস্ত্র, রাজনৈতিক কৌশল। এর বাইরে তারা আর কোন কৌশল জানে না। তারা আজও সেই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। হত্যার ষড়যন্ত্র এবং লাশ ফেলানো তাদের রাজনৈতিক কৌশল। লাশের রাজনীতি তারা করতে চায়, তারা মানুষ হত্যা করে সেটা আওয়ামী লীগের ওপর চাপিয়ে দিবে। তারা অরাজকতা সৃষ্টি করে বিদেশীদের মাধ্যমে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়।

তিনি বলেন,যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে, যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চায়, তারা শেখ হাসিনার সাথে আছে, উন্নয়নের সাথে আছে। এই উন্নয়ন এবং দেশের শান্তি বিএনপির ভাল লাগে না। এটাকে বিনষ্ট করাই তাদের মুল উদ্দেশ্য। তাদের প্রধান শত্রু এদেশের জনগণ। কারণ তারা একাত্তরে পরাজিত হয়েছিল এদেশের জনগণের কাছে।

যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন,আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশের মুক্তিকামী জনগণ যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। এ কারণে তাদের আক্রোশ এদেশের জনগণের ওপর। আওয়ামী লীগ তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এদেশের জনগণ।

শেখ পরশ বলেন,বিএনপি-জামাত এদেশের মানুষকে ভিকটিম বানায়, তাদের ওপরেই আঘাত করে, অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। সাধারণ মানুষকে হত্যা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা এদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে চায়, তারা এদেশকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান বানাতে চায়। তখন তারা শুধু ১৫ই আগস্টে জন্মদিন পালন নয়, প্রতিদিনই তারা জন্মদিন পালন করবে, উৎসব করবে। এটাই হলো বিএনপির আসল চরিত্র।

সঞ্চালকের বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পন্নতা অর্জন করে, মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পায়, মানুষের মাঝে শান্তি ফিরে আসে কিন্তু বিএনপি-জামাতের সেটা পছন্দ না। এ কারণেই ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে তারা আওয়ামী লীগকে হারিয়ে দেয়, ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তারা সারা বাংলাদেশে হত্যা, গুম, লুটপাট, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের উৎপত্তিসহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হত্যা করে।

তারা হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন বানিয়ে দেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ রাষ্ট্রে পরিণত করতে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামাত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। তিনি আরও বলেন, যারা দেশ চায় নাই, দেশের স্বাধীনতা চায় নাই সেই ষড়যন্ত্রকারী বিএনপি-জামাত আবারও দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে হাত মিলিয়েছে। যেন কোনভাবেই আগামী ২৪ সালের নির্বাচন না হয়। এই ষড়যন্ত্রকারীরাই ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। এই ষড়যন্ত্রকারীরা যেন দেশের মানুষের জান-মাল নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে না পারে, তাদেরকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন না দেখাতে পারে সে জন্য যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সদা সজাগ থাকতে হবে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোসহীন এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে সকল ষড়যন্ত্রের জবাব রাজপথে দিবে যুবলীগ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, তাজউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন