মোঃ হাবিবুল হাসান হাবিব ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় মাটিতে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী বীর সৈনিক জাহাঙ্গীর আলম, জসিম উদ্দিন ও শরিফ প্রধান নিহত হয়েছেন গত ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায়)। এদের মধ্যে সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতপাড়া হাজীপাড়া গ্রামে। তিনি লতিফর রহমানে ছেলে। লতিফর রহমানের পাঁচ ছেলের মধ্যে জাহাঙ্গীর চতুর্থ। শান্তিরক্ষী নিহত সৈনিক জাহাঙ্গীর আলম ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১০ মাস আগে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতেন্ত্রর ব্যানব্যাট -৮ এলাকার উইক্যাম্পে শান্তিরক্ষী মিশনে যান তিনি।
মাটিতে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে জাহাঙ্গীরসহ তিন বাংলাদেশী সেনাবাহিনী প্রাণ হারালে সেবাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোবাইলে জাহাঙ্গীরের মৃত্যুর খবর তার বড়ভাই কর্পোরাল আবুজার রহমানকে নিশ্চিত করেন। এরপর থেকে জাহাঙ্গীরের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সেদিন থেকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বাবা লতিফর রহমান, মা গোলেনুর বেগম, মৃত জাহাঙ্গীরের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী শিমু আক্তার। শুধু পরিবার নয় জাহাঙ্গীরের বাড়ির আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে শোকের ছায়া। শুক্রবার বিকেলে নিহতদের মৃতদেহ দেশে আসে। তেজগাঁও আর্মি এভিয়েশনে সকল কার্যক্রম শেষে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে আজ ১৫ অক্টোবর (শনিবার) সকালে ডিমলা রানী বৃন্দা রানী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাহাঙ্গীর আলমের নিহত দেহ নিয়ে আসা হয়।
এসময় ক্যাপ্টেন তানজিদুল ইসলাম ২০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী খোলাহাটী সহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিহত জাহাঙ্গীর আলমের কফিনটি গ্রহন করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আফতাব উদ্দিন সরকার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বেলায়েত হোসেন, ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ লাইছুর রহমান সহ অশ্রæ সজল চোখে শহীদ জাহাঙ্গীরের পরিবারের সদস্যরা। এরপর নিহত জাহাঙ্গীর আলমের কফিনটি প্রিয়জনরা নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে। দেশ মাতৃকার এমন শ্রদ্ধা সেন্টাল আফ্রিকা রিপাবলিকে সংঘাতময় ঝুকি পরিবেশে গিয়ে নিপিড়িত মানুষের কাছে শান্তি আর সাহায্যের হাত বাড়ানো বীর সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের কফিনটি লাল সবুজের প্রিয় পতাকায় মুড়ে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে রাস্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।