রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeঅর্থনৈতিককিস্তির টাকা দিতে বসত ভিটা হারাচ্ছেন গ্রাহক

কিস্তির টাকা দিতে বসত ভিটা হারাচ্ছেন গ্রাহক

গ্রাহকদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আলেশা মার্ট প্রধান মো. মঞ্জুর আলম শিকদার। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। তবে ভালো নেই তার প্রতারণার শিকার সাধারণ গ্রাহকরা।

মঞ্জুর আলম শিকদার একবার ভেবেও দেখেননি এই সব গ্রাহকের টাকা জোগানোর পিছনের গল্প। ভাবেননি পণ্য কিংবা টাকা না পেলে প্রতারিত গ্রাহকদের কী হবে? এমনকি চিন্তাও করেননি কখনো, তার প্রতারণার কারণে সে সকল মানুষদের জীবনে দুর্দশা নেমে আসতে পারে।

আলেশা মার্টের লোভনীয় অফার দেখে পণ্য কিনতে প্রতিষ্ঠানটিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছেন অসংখ্য মানুষ। তাদের স্বপ্ন ছিল এসব পণ্য হাতে পেলে তা বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হবেন। আবার অনেকে বিনিয়োগ করেছেন নিজের শখ পুরণে। আর তাতেই হয়েছেন প্রতারণার শিকার। প্রতারিত হয়ে বর্তমানে দিশেহারা হয়ে ছুটছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীদের কেউ বিনিয়োগ করেছেন লোন নিয়ে। আবার কেউ আত্মীয় স্বজন থেকে ঋণ নিয়ে। এই ঋণের টাকা শোধ করতে ভিটে-বাড়ি বিক্রির উপক্রম হয়েছে অনেকের। তাদেরই একজন সাগর মোল্লা। চাঁদপুরের বাসিন্দা তিনি। সংসার চালাতে গ্রামে একটি ছোট্ট চায়ের দোকান আছে তার। গ্রাম্য একটি সমবায় সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে আলেশা মার্টে ২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন সাগর।

সাগর বলেন, ‍‍`ফেসবুকে আলেশা মার্টের লোভনীয় অফার দেখেছিলাম। এক চাচাতো ভাই আলেশা মার্টে কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। তাই একটি সমবায় সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে দুইটি মোটরসাইকেল অর্ডার দেই। মোটর সাইকেল দুইটি বিক্রির জন্য কাস্টমারও রেডি ছিল। হঠাৎ আলেশা মার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মোটর সাইকেলগুলো আর পাইনি। এমনকি রিফান্ডের চেকও পাইনি।‍‍`

তিনি বলেন, ‍‍`কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয় লোন। দের বছরের বেশি সময় কিস্তি পরিশোধ করতে করতে আমার অবস্থা একবারে নাজেহাল। বর্তমানে সমবায় সংস্থাটির চাপে ভিটে বাড়ি বিক্রির অবস্থা হয়েছে। যা আয় হয় সবই কিস্তির টাকা দিতে হয়। সংসার চলছে না। কিস্তির লোকেরা এসে বাড়িতে খারাপ ব্যবহার করে। জায়গা জমিও নেই যে, তা বিক্রি করে শোধ করবো। অন্যের জমি বর্গা চাষ করে যা ধান পাই তাতে বছরে সংসারের চালের জোগান হয়। কিন্তু অন্য সকল খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হয়।‍‍`

সাগর বলেন, ‘আমার এখন বাড়িতে থাকাই দায়। নিজের সম্বল বলতে এই ভিটে বাড়িটাই আছে। এটা বিক্রি করলে আমার আর কোনো কিছু থাকবে না। যাযাবরের মতো কাটাতে হবে জীবন। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাবো তখন?’

তিনি বলেন, ‍‍`আত্মীয় স্বজনদের কেউও সাহায্য করছেন না। করবেন বা কেনো? আমি তো লোভ করেছি। আর এই লোভের পাপ ভোগ করতেছি। কিস্তির লোকের খারাপ ব্যবহার থেকে বাঁচাতে স্ত্রী সন্তানদের শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়েছি।‍‍`

তিনি আরও বলেন, ‍‍`আমি জানি না। কবে আমার এই ঋণ শোধ  হবে। আমি আলেশা মার্ট প্রধানের নিকট আকুতি জানাচ্ছি – যেন আমার টাকাগুলো ফিরিয়ে দেন। তিনি যেন আমার মতো অসহায় লোকের রক্তে কামানো টাকা ভোগ না করেন।‍‍`

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন