রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeজাতীয়সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই

প্রবীণ রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংসদের উপনেতা, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই। গতকাল রাত ১১-৪০ মিনিটে তিনি রাজধানীর সম্মিলিতি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

মৃত্যুকালে তিনি তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কান্ডারি উচ্চ রক্তচাপসহ বাধ্যকজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি ফরিদপুুর-২ আসন থেকে বার বার নিবাচিত হয়েছেন। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরীসহ রাজনীতিবিদ, মন্ত্রীসভার সদস্য, সংসদ সদস্যগণ।

আওয়ামী লীগের উত্থান পতনের স্বাক্ষী প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুর খবর শুনে রাজনৈতিক সহযোদ্ধা রাতেই কেউ কেউ হাসপাতালে ছুটে যান। গতকাল রাত দেড়টায় এ রিপোট লেখা পযন্ত তার নামাজে নামাযা, দাফনের সময় জানা সম্ভব হয়নি।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রমিলা রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা। এর আগে তিনি পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৫৬ সাল থেকে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৯–১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার এবং ১৯৭৬ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও তিনি পালন করছেন। ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। তার পিতার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মাতা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্বামী রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী। ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন।
জীবনের ৬৬ বছরই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তবে গত কয়েক বছর অসুস্থতার জন্য দলের কোনো কার্যক্রমেই দেখা যায়নি আওয়ামী লীগের নানা উত্থান-পতনের সাক্ষী এই নেত্রীকে। স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পরই অসুস্থতা ঘিরে ধরে তাকে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। গত প্রায় চার বছরে সংসদেও যাওয়া হয়নি।

নির্বাচনের পর মাত্র একবার যেতে পেরেছেন নিজ নির্বাচনি এলাকায়।
তার পরিবার সূত্র জানা গেছে, ২০১৬ সাল পর্যন্ত রাজধানীর বনানীতে তার বড় ছেলে আইমান আকবর বাবলু চৌধুরীর সঙ্গে থেকেছেন সাজেদা চৌধুরী। সেখান থেকে ২০১৬ সালে তার ছোট ছেলে শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরী তাকে নিয়ে আসে। তখন থেকে ছোট ছেলের ধানমণ্ডির বাসায় থাকতেন এই প্রবীণ নেতা।
সাজেদা চৌধুরী গত নবম ও দশম সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে একাদশ জাতীয় সংসদের উপনেতা পদে তার বহাল থাকা-না থাকা নিয়ে আলোচনা চলছিল। তবে সবকিছুর অবসান করে ফের জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুর খবর গতকাল রাতে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর নিবাচনী এলাকা ফরিদপুরসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুকে গতকাল রাতে আরো শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, চীফ হুইপ নুর-এ আলম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, মিজা আজম, হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিল্পব বড়ুয়া প্রমুখ।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

Abdullah Al Niat
Abdullah Al Niat
স্বপ্ন আকাশ ছোয়া� গন্তব্য বহুদূর � বর্তমানে সাংবাদিক চর্চায় ব্রত �

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন