যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সাক্ষাত করে পদত্যাগ জমা দিয়েছেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। একইদিনে রানির কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বাকিংহাম প্রাসাদ দেয়া বিবৃতিতে জনসনের পদত্যাগপত্র গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে স্থানীয় সময় সকালে বালমোরাল প্রাসাদে পৌঁছান জনসন। পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে প্রাসাদ ছেড়ে যান তিনি। পরে প্রাসাদে যান লিজ ট্রাস। এ সময় লিজ ট্রাসকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সরকার গঠনের আহ্বান জানান রানি।
এর আগে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে বিদায়ী ভাষণ দেন জনসন। এ সময় তার সঙ্গে স্ত্রী ক্যারিও, দলের এমপি, সহযোগী এবং তার মিত্ররা উপস্থিত ছিলেন। ভাষণে তিনি ব্রেক্সিট, কোভিড টিকাসহ তার সরকারের নানা সফলতা ও হালের ইউক্রেন প্রসঙ্গ নিয়ে নিজের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
শেষ বক্তৃতায়ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন জনসন। এতে তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জ্বালানি সংকট দিয়ে যুক্তরাজ্যের জনগণকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারবেন না। নতুন কনজারভেটিভ সরকার এই সংকট কাটিয়ে তুলবে।
জনসন বলেন, রাশিয়ার ‘আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যুক্তরাজ্যকে ইউক্রেনের পাশে থাকতে হবে। নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন তিনি।
রানির নিয়োগ পাওয়ার পর ট্রাস এরই মধ্যে বালমোরাল প্রাসাদ ছেড়েছেন। তিনি এখন তার নতুন বাসভবন এবং কর্মক্ষেত্র ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের পথে রওনা হয়েছেন।
সেখানে পৌঁছে তিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম ভাষণ দেবেন। সরকারে থেকে কী কী করতে চান তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন ট্রাস।
লিজ ট্রাস ১৯৭৫ সালের ২৬ জুলাই ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন কেনেথ এবং প্রিসিলা মেরি ট্রাসের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক, মা একজন নার্স।
ট্রাসের বয়স যখন চার, তখন তার পরিবার চলে আসে স্কটল্যান্ডে। সেখানকার একটি স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু ট্রাসের। এরপরে তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন। লেখাপড়া শেষে তিনি কিছুদিন অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেন।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি লিবারেল ডেমোক্র্যাটসের প্রেসিডেন্ট এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাট যুব ও ছাত্রদের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যও ছিলেন লিজ ট্রাস। তবে ১৯৯৬ সালে স্নাতক শেষে যোগ দেন কনজারভেটিভ পার্টিতে। ২০০০ সালের গোড়ার দিকে ১০ বছরের বড় এক সহকর্মীকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তানও রয়েছে।