রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeসারা বাংলামিলছে না শ্রমিক, পানির নিচে ধান, বিপাকে কৃষকরা

মিলছে না শ্রমিক, পানির নিচে ধান, বিপাকে কৃষকরা

জয়পুরহাটে আলুর পর একটু দেরিতেই রোপণ করা হয় বোরো ধান। অন্যান্য এলাকায় যখন পাকা ধান কাটা শেষ পর্যায়ে, তখন এ জেলায় শুরু হয় বোরো ধান কাটা। বর্তমানে জয়পুরহাটে মাঠের পর মাঠ জুড়ে পড়ে আছে পাকা ধান। কয়েকদিনের ঝড়-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের পাকা ধান। এর সাথে দেখা দিয়েছে কৃষি শ্রমিকের সংকট। ঝড়-বৃষ্টির পর বেশি দামেও মিলছে না শ্রমিক। অধিকাংশ জমির ধান মাটিতে নুয়ে গেছে। পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৬৯ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) এবং হাইব্রিড জাতের ধান হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনের জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ১২০ হেক্টর জমিতে কম চাষ হয়েছে। সে হিসেবে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ৩৮ শতাংশ জমির ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। এখনো ৬২ শতাংশ ধান মাঠেই আছে।

কৃষকরা জানান, এ এলাকায় আলুর পর ধান রোপণ করা হয়। সে কারণে ধান পাকতে একটু দেরি হয়। এবারও ধান পাকতে দেরি হয়েছে। যে সময় মাঠের পর মাঠ জুড়ে ধান পাকে, ঠিক সেই সময়ই শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি শ্রমিকের সংকটের কারণে ধান কাটা যাচ্ছে না। বেশি টাকাতেও শ্রমিক মিলছে না। গত কয়েকদিনের ঝড়-বৃষ্টির কারণে অনেকের ধান বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। জমানো পানি অন্যত্র সরানোর কোনো উপায়ও নেই।

জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার ভাসিলা গ্রামের কৃষক সুজন মিয়া জানান, গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়েছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এবার সেই এক বিঘার ধান কাটতে মজুরি দিতে হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। তারপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী ও আক্কেলপুর উপজেলার মাতাপুর গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, এবার ধানকাটা শ্রমিকের খুবই সংকট। এর আগে কখনো শ্রমিকের সংকট হয়নি। যদিও বাইর থেকে শ্রমিকের দল আসছে, তাদের নিয়ে গৃহস্থদের মধ্যে টানাহেঁচড়া শুরু হয়েছে। জমানো এক হাঁটু পানির সাথে বজ্রপাতের আতঙ্কে শ্রমিক ও কৃষক উভয়ই মাঠে নামতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে মাঠের ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাহেলা পারভিন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে পুরোদমে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে শ্রমিকের সংকট আরও দেখা দেবে। কারণ এ পেশায় নতুন করে আর কোনো লোক আসবে না। আমরা কৃষকদের ধান কাটার যন্ত্রপাতি ভর্তুকিতে নিতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি কৃষক এসব যন্ত্রপাতি সহজেই ক্রয় করবেন। তাহলেই এ সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। অল্প সময়েই ফসল ঘরে উঠবে।

পর্যালোচনা সংক্ষিপ্ত বিবরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন