আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের বাহিরে সকল সংকট কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। কেউ যদি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ও দেশের জাতিসত্ত্বার ওপর আঘাত আনে, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বন্ধ করে দিতে চায়, দেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেয় তাদের প্রতিহত করা হবে। গণতন্ত্রের ওপর কোনো আঘাত আমরা মেনে নেব না। দেশের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য গণতন্ত্রের ওপর যারাই আঘাত করবে তাদের প্রতিহত করা হবে।

পবিত্র রমজান উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আজ রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে গরীব, অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমাদের নেত্রী গণমানুষের নেত্রী। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ বলেছে, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মানুষের নিরঙ্কুশ সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তার সঙ্গে কারো তুলনা হয় না। তিনি দেশের জন্য যেভাবে কাজ করছেন ও সকল দুর্যোগ যেভাবে মোকাবেলা করেছেন, এর পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের সময় সারা পৃথিবী যখন অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে সময়ও তিনি যেভাবে বাংলাদেশের সংকট মোকাবেলা করে উঠেছেন এবং দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন- তা নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল ও কিছু ব্যক্তি কখনও দেশের ভালো দেখতে পারে না। তারা কখনও কখনও গণমাধ্যম ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র করে। গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের বন্ধু। গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়ন ও গণকল্যাণমুখী। দেশের বড় বড় কাজগুলো শেখ হাসিনার মাধ্যমে হয়েছে এটি বলতে যাদের লজ্জা লাগে তারাই ষড়যন্ত্র করে। আমাদের ইতিহাস হল রক্তে রঞ্জিত ইতিহাস। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের স্বাধীনতা। আমাদের স্বাধীনতা দিবসে এই স্বাধীনতাকে নিয়েই অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করা হয়েছে। একটি গণমাধ্যম একজন শিশুর ছবি ব্যবহার করে মিথ্যাচার করেছে। সত্য সংবাদ হলে আমদের আপত্তি ছিল না। আমাদের আপত্তি হল তারা এক শিশুর ছবি ব্যবহার করে মিথ্যাচার করেছে। তারা মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে আমাদের ছোট করার অপচেষ্টা করেছে।

আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, কুচক্রী মহল বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে এখনও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করছে। তারা বলে বাংলাদেশে নাকি মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। মানুষের পক্ষে কথা বলায় নাকি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোনো একজন ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করার কারণে মামলা হয় এবং মামলার পর আইনের আওতায় আনা হয়েছে। সেই শিশু নিজেও বলেছে, তাকে ১০ টাকা দিয়ে ছবি তোলানো হয়েছে এবং সংবাদের উদ্ধৃত কথা সে বলেনি। শিশুর পিতা-মাতা বলেছে, আমাদের অনুমতি না নিয়ে তারা ওই শিশুটিকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। এমন মিথ্যাচার অতীতেও হয়েছে। এগুলো করার মাধ্যমে তারা আমাদের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সিয়াম সাধনার মাস হিসেবে আনুষ্ঠানিকতা বাদ দিয়ে মানুষের সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। দুর্যোগের সময়ও আমরা পাশে থাকি। মানুষকে নিয়েই আমাদের রাজনীতি। এটাই আমাদের শিক্ষা। এটাই জাতির পিতার আদর্শ। জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সবসময় কাজ করে যাচ্ছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, বিএনপি তাদের বিদেশি বন্ধুদের নিয়ে পাঁচ তারকা হোটেলে ইফতার পার্টি করে, আর আওয়ামী লীগ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত রাজনীতি করে ক্ষমতার জন্য, আর আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে জনগণের জন্য। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে থাকবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি মানুষকে নানাভাবে কষ্ট দেওয়ার কর্মসূচি দিচ্ছে। বিএনপির গনবিরোধী কার্যক্রম মানুষ প্রত্যাখান করেছে।

খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে পাঁচশতাধিক ব্যক্তিকে খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ করা হয়।