বাংলাদেশের খুলনার রামপালে মৈত্রী সুপার তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউস থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করা হয় এসব প্রকল্প।
একই সঙ্গে রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু এবং খুলনা-দর্শনা ও পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেলসংযোগ প্রকল্পসহ আরও চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রতিবেশি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
সফরের দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও একান্ত বৈঠক করেন। পরে দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। একই সঙ্গে উদ্বোধন হয় প্রকল্পগুলো। এরপর যৌথ বিবৃতি দেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এখানে আমরা এমন কিছু সমঝোতা স্মারক করেছি, যাতে উভয় দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণ হবে। এমন কিছু বিষয়ে আমরা মতৈক্যে পৌঁছেছি যা উভয় দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর। আমাদের প্রত্যাশা, শুধু বাংলাদেশ-ভারত নয়, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ারও কল্যাণ হোক, সমৃদ্ধি হোক।
এদিন দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
সমঝোতা স্মারকগুলো হলো: ১. বাংলাদেশের সিলেটে কুশিয়ারা নদী থেকে সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় ১৫৩ কিউসেক পানি বণ্টন; ২. বাংলাদেশের বিসিএসআইআর ও ভারতের সিএসআইআরের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা; ৩. ভারতের ভোপালের ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে সমঝোতা; ৪. বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের ভারতীয় রেলওয়ের ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ; ৫. বাংলাদেশ রেলওয়ের আইটিবিষয়ক সহযোগিতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা; ৬. বাংলাদেশ টেলিভিশন ও প্রসার ভারতীর মধ্যে সমঝোতা স্মারক এবং ৭. স্পেস টেকনোলজি বা মহাকাশ প্রযুক্তি খাতে সমঝোতা স্মারক।
সমঝোতা স্মারক সই ও প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের পর দুই প্রধানমন্ত্রী যৌথ বিবৃতি দেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এমন কিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি, যাতে উভয় দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণ হবে। এমন কিছু বিষয়ে আমরা মতৈক্যে পৌঁছেছি যা উভয় দেশের মানুষের জন্য কল্যাণকর। আমাদের প্রত্যাশা, শুধু বাংলাদেশ-ভারত নয়, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ারও কল্যাণ হোক, সমৃদ্ধি হোক।’
খুলনার রামপালে ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্রিডলাইনে ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্টটি বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) মাধ্যমে স্থাপন করা হচ্ছে। এটি ভারতের এনটিপিসি লিমিটেড এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্টের বোর্ড (বিপিডিবি) মধ্যে একটি ৫০:৫০ শতাংশ যৌথ উদ্যোগ কোম্পানি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল সোমবার দিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।